ছবি: প্রতিনিধি
পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছোড়া এক যুবকের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই যুবকের পরিচয় পরে জানা যায় তুষার হোসেন, বয়স ২১। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। চার দিন পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত থেকে রেহাই পেলেন না তিনি।
সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ধানবান্ধি এলাকার জে সি রোডসংলগ্ন মতিন সাহেবের ঘাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পাবনা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একটি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তুষার ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ভেলুপাড়া মহল্লার বাসিন্দা আবু তাহেরের ছেলে।
ডিবি পুলিশ জানায়, আধুনিক প্রযুক্তি, স্থানীয় সোর্স এবং দীর্ঘ ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তুষারের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তুষার স্বীকার করেন, তার কাছে একটি অবৈধ পিস্তল ও দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ ছিল। তার দেখানো জায়গা থেকে মাটি খুঁড়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় লোডেড পিস্তল ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে অস্ত্র আইনে ঈশ্বরদী থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৭ নভেম্বর বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলার চরগড়গড়ি গ্রামে জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয় বহু মোটরসাইকেলে। সংঘর্ষের একটি ভিডিওতে তুষারকে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তিনি বিএনপি নাকি জামায়াত কর্মী-এ নিয়ে দুই দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য উঠে আসে।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হাবিবুর রহমান দাবি করেন, তুষার জামায়াত নেতার ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে জামায়াত নেতারা বলেন, ওই যুবকের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পুলিশ নিশ্চিত করে, তুষার জামায়াতের কর্মী এবং তিনি বিএনপির দায়ের করা মামলার ৬ নম্বর আসামি।
সংঘর্ষের পরদিন বিএনপির পক্ষ থেকে ৩২ জন জামায়াত নেতার নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। এতে ১৫০ থেকে ২০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয় এবং জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডলকে প্রধান আসামি করা হয়। একই দিনে জামায়াতের পক্ষ থেকেও ৩৮ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। এতে বেশিরভাগই বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ ও আত্মীয়।
সংঘর্ষে লুট হওয়া মোটরসাইকেলের মধ্যে এরই মধ্যে ২১টি উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার ৯টি, সোমবার ৭টি, মঙ্গলবার ১টি এবং ঘটনাস্থল থেকে আগুনে পোড়া কয়েকটি মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :