মাটির ৪২ ফুট নিচেও নেই শিশু সাজিদ, নতুন সিদ্ধান্ত নিল ফায়ার সার্ভিস

  • রাজশাহী ব্যুরো | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
মাটির ৪২ ফুট নিচেও নেই শিশু সাজিদ, নতুন সিদ্ধান্ত নিল ফায়ার সার্ভিস

ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোর উপজেলার কয়েলের হাট মধ্যপাড়া এলাকায় শিশু সাজিদকে উদ্ধারে ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনও সফল হয়নি ফায়ার সার্ভিস। গর্তের ৪২ ফুট পর্যন্ত অনুসন্ধান চালিয়েও শিশুটির কোনো সন্ধান মেলেনি। তাই নতুন করে আরও ১০ ফুট গভীর পর্যন্ত খননের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলমান ছিল।

ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম জানান, গর্তটি ১৫০ থেকে ২০০ ফুট গভীর। এর ভেতরে যেকোনো স্থানে শিশুটি আটকে থাকতে পারে। তিনি বলেন, এত গভীর গর্তে তাৎক্ষণিক উদ্ধার অভিযান চালানোর মতো প্রযুক্তি বিশ্বের কোথাও নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে গর্তের পাশে আরেকটি গর্ত খনন করে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এত গভীরে উদ্ধার অভিযানে উন্নত দেশেও ৭৫ থেকে ৭৮ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

তাজুল ইসলাম আরও জানান, প্রথমে ৩৫ ফুট পর্যন্ত ক্যামেরা নামানো হলেও মাটি ও খড় জমে থাকায় কিছু দেখা যায়নি। এখন ৪৫ ফুট পর্যন্ত অনুসন্ধান সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চেষ্টা চালাচ্ছে।

এর আগে বুধবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফা ক্যামেরা নামানো হলেও শিশুটিকে শনাক্ত করা যায়নি। তবে একই দিন দুপুরে গর্তের ভেতর থেকে শিশুটির কান্নার আওয়াজ শোনা যায়, যা পরিবার ও স্থানীয়দের আরও অস্থির করে তোলে। 

শিশুটির মা রুনা খাতুন জানান, বুধবার দুপুরে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি বাড়ির পাশের মাঠে যাচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ পেছন থেকে সাজিদ মা বলে ডাক দিলে তিনি পিছনে তাকান। কিন্তু দেখেন, ছেলে নেই। এরপরই গর্তের ভেতর থেকে কান্নাভেজা কণ্ঠে মা ডাক শোনেন। গর্তটির ওপর খড় বিছানো থাকায় তিনি বুঝতে পারেননি, সেখানে এত গভীর একটি গর্ত লুকিয়ে আছে। পা হড়কেই ছেলে নিচে পড়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর আগে জমির মালিক সেচের জন্য সেমিডিপ নলকূপ বসাতে গিয়ে গর্তটি খনন করেছিলেন। পানি না পেয়ে কাজটি আর এগোয়নি এবং গর্তটি খোলা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়। সেই অবহেলাই দুই বছরের সাজিদের জীবনকে ঝুঁকিতে ঠেলে দিয়েছে। শিশুটি গর্তে পড়ে গেলে প্রথমে গ্রামবাসী চেষ্টা চালালেও তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। পরে খবর দেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসে।

গভীর অন্ধকার গর্তের তলায় কোথায় আছে সাজিদ-এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।

এসএইচ 

Link copied!