অনিয়মে চলছে যশোরে ১৩৮ কিন্ডারগার্টেন

  • তবিবর রহমান, যশোর | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০১৭, ০৮:০১ পিএম
অনিয়মে চলছে যশোরে ১৩৮ কিন্ডারগার্টেন

যশোর: জেলায় ১৭৩ কিন্ডারগার্টেনের মধ্যে নিবন্ধনই নেই ১৩৮টি প্রতিষ্ঠানের। ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠা এসব কিন্ডারগার্টেন সরকারের কাছ থেকে সব সুবিধা গ্রহণ করলেও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছে না। অধিকাংশ স্কুলগুলোতেই নেই গভার্নিং বডি, নির্দিষ্ট নির্ধারিত জায়গা, শ্রেণির পরিধি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগের কথা থাকলেও তা ধারধারেন কেউ। নিয়োগের ক্ষেত্রে করা হয় আত্মীয়করণ-স্বজনপ্রীতি।

যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র মতে, যশোরের আট উপজেলায় মোট ১৭৩টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। এর মধ্যে যশোরে ২৮টি, চৌগাছায় ৫টি, কেশবপুর ও বাঘারপাড়ায় ১টি করে মোট ৩৫টি স্কুল নিবন্ধিত। ঝিকরগাছা, মণিরামপুর ও শার্শার ৫১টি কিন্ডারগার্টেনের কোনটিরই নিবন্ধন নেই। অথচ ওই সব স্কুলগুলো পাচ্ছে সরকারি বইয়ের সুবিধা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী জানান, সরকার যেহেতু সবার হাতে বই তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সে আলোকেই বই প্রদান করা হয়।

এদিকে নার্সারি, প্রিপারেটরি, কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতিতে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যে সব বিধিমালা নির্ধারিত রয়েছে তা না মানা হলেও যশোর সদরে নিবন্ধন পেয়েছে ২৮টি স্কুল। সরকারি এই নির্দেশনা মোতাবেক অধিকাংশ স্কুলগুলোতেই নেই গভার্নিং বডি, নির্দিষ্ট নির্ধারিত জায়গা, শ্রেণির পরিধি। ব্যক্তিমালিকানায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় খেয়ালখুশি মত পরিচালিত হচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগের কথা থাকলেও মানা হয় না সে নিয়মও। নিয়োগের ক্ষেত্রে করা হয় আত্মীয়করণ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘কিন্ডারগার্টেনের এসব শিক্ষকদের দুই-একজন ছাড়া প্রায় সবাই অপারদর্শী, অনভিজ্ঞ’। এদিকে, ‘কয়েক মাসের বেতন আটকে রেখে কখনো কখনো বহিস্কারও করা হয় শিক্ষকদের’ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

কিন্ডারগার্টেন ক্যাটাগরির এ সব স্কুলে পাঠদানে সিট প্রদান, নোট প্রদান ইত্যাদি আই ওয়াশ থাকলেও অধিকাংশগুলোতেই পায়রার খোপের মত শ্রেণিকক্ষে চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে বাড়ছে শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি। শিক্ষার্থী অনুপাতে নেই সঠিক সেনিটেশন ব্যবস্থা। অথচ ব্যবসা চালিয়ে যেতে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাগ বোঝাই বইয়ের স্তুপ এবং অমানবিক সিলেবাস।

প্রাথমিক বিদ্যালয় (বাংলা ও ইংরেজি) নিবন্ধন বিধিমালা- ২০১১ এর ২১ (২) ধারা অনুযায়ী পাঠ্যক্রমের বাইরে কোনো বই স্কুলে পাঠ্য করতে হলে তা জেলা প্রাথমিক শিক্ষাকর্তার অনুমোদন নেওয়ার কথা থাকলেও ‘এ পর্যন্ত কোনো স্কুলকেই এ ধরণের কোন অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে দেখেননি’ বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপসকুমার অধিকারী।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!