শোকের দিনে জামায়াত নেতাসহ ইউএনও’র বনভোজন

  • পাবনা প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৭, ০৫:২৭ পিএম
শোকের দিনে জামায়াত নেতাসহ ইউএনও’র বনভোজন

পাবনা: একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস। রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষার অধিকার আদায়ের মাস ফেব্রুয়ারি। কিন্তু এ শোকের দিনে জামায়াত নেতাসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেতে উঠেছেন বনভোজনের উল্লাসে।

২১শে ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) জেলা জামায়াতের নায়েবে আমিরের সঙ্গে বনভজনে ব্যস্ত সময় পার করলেন আটঘরিয়া ইউএনও মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান। তাদের বনভোজনে অবস্থানের ছবি নিয়ে ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

আটঘরিয়া উপজেলা প্রশাসন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান শহীদ দিবস ঢিলেঢালাভাবে পালন করে । এদিন সকাল ১০টার দিকে উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগে পরিষদের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে নিয়ে পাকশীতে বনভোজনে মেতেছিলেন ইউএনও সাইদুজ্জামান।

বনভোজনে ইউএনও’র সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়াতে নায়েবে আমির ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাও: জহুরুল ইসলাম খান। আর এই বনভোজনের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার সচেতন মহলের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন এলাকা, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে জনৈক বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সরকারি কর্মসূচি ঢিলেঢালাভাবে পালন করে। জেলা জামায়াতে নায়েবে আমির ও উপজেলা চেয়ারম্যান মাও: জহুরুল ইসলাম খানকে সঙ্গে নিয়ে বনভোজনে দিন পার করায় আমরা ইউএনও সাইদুজ্জামানকে ধিক্কার জানাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জনৈক প্রধান শিক্ষক বলেন, শোকের এই দিনে উপজেলা প্রশাসনের এই ধরনের আয়োজন দুঃখজনক।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল হক বলেন, এ ধরনের আয়োজন হয়েছে কি না আমার জানা নেই। তবে যদি ২১ শে ফেব্রুয়ারি শোকের দিনে উপজেলা প্রশাসন জামায়াত নেতাকে সঙ্গে নিয়ে এ ধরনের আয়োজন করে থাকেন তাহলে এই ন্যাক্কারজনক আয়োজনকে আমরা ঘৃণা জানাই।

আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, শোকের দিনে এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। আর এ ধরনের আয়োজন নিন্দনীয় ও দু:খজনক।

এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান বলেন, শুধু এবারই নয়, এর আগের একুশে ফেব্রুয়ারিতেও এভাবে বনভোজন হয়েছে। এখানে জামায়াত নেতা বলে কোনো কথা নয়, তিনি তো জনপ্রতিনিধি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আর শুধু আমরাই নই, উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের অনেকেই ছিলেন।

তবে শোকের দিন এমন বনভোজন করা কতটুকু ন্যায় সঙ্গত এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি বনভোজন না করে অন্যকোনো দিন করা যেতো, তবে অনেকে থাকে না বিধায় সবার উৎসাহে ওইদিন করা হয়েছে। বিষয়টি অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!