রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট অব্যাহত

  • রাজশাহী প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০১৭, ১২:৫১ পিএম
রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট অব্যাহত

রাজশাহী: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে। শনিবার (৪ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের কারণে চিকিৎসা সেবায় বিঘ্ন ঘটায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসাধীন রোগী ও তাদের স্বজনরা। রোববার (৫ মার্চ) সকালে অনেককে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।

চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসকের শাস্তি মওকুফের দাবিতে বগুড়ার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও কর্মবিরতীতে নেমেছে। এছাড়াও কর্মবিরতীতে নেমেছে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, খুলনা মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জের নর্থ বেঙ্গল মেডিকেল কলেজ, ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

রোববার সকালে পেটের ব্যথা নিয়ে নওগাঁ থেকে রামেক হাসপাতালে আসেন আমজাদ হোসেন (৫৪)। জরুরি বিভাগে নেমে তিনি জানতে পারেন যে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে। তিনি সেখানে আর ভর্তি না হয়ে পাশের কোনো ক্লিনিকের উদ্দেশে রওনা দেন।

রাজশাহী দুর্গাপুর থেকে হামিদা খাতুন (৬৫)। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। তিনিও ফিরে যান। শুধু নতুন আসা রোগীরাও না। হাসপাতালে ভর্তি থাকা পুরাতন রোগীদের অনেকেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেছেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের মুখপাত্র আবু রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, বগুড়ার চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি মওকুফ করে কর্মস্থলে বহালের দাবিতে ‘সারা দেশে’ ইন্টার্নদের যে কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে একাত্মতা প্রকাশ করা হয়েছে। এ কর্মবিরতি চলবে।

রামেক হাসপাতালে চিকিৎসার বিষয়ে উপ-পরিচালক ডা. সারোয়ার জাহান জানান, হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। প্রতিটি ওয়ার্ডে রেজিস্টারসহ অন্য চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে। তারাই সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চার ইন্টার্ন চিকিৎসকের শাস্তি ঘোষণা করলে ওইদিন দুপুরের পর থেকে বগুড়া মেডিকেলে কোনো ঘোষণা ছাড়া তারা কাজে আসছেন না। শনিবার সকালে বগুড়া মেডিকেল কলেজের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধনে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মবিরিতির ঘোষণা দেন।

সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগির ছেলে ও দুই মেয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মারধরের শিকার হন। ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর ২ ফেব্রুয়ারি চার ইন্টার্ন চিকিৎসককে শাস্তির ঘোষণা আসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। চারজনের ইন্টার্নশিপ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। ছয় মাস পরে তাদের চারজনকে অন্য চারটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন করতে বলা হয়।

শাস্তিস্বরূপ এই কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল, নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল, মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল ও কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে। এরপর থেকে প্রতিষ্ঠানটির ইন্টার্ন চিকিৎসকরা অঘোষিত কর্মবিরতি পালন করছিলেন। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে শনিবার।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!