নারী শিশুসহ নিখোঁজ ১০

ট্রলারডুবি: তৃতীয় দিনে আরও ৭ মরদেহ উদ্ধার

  • বাগেরহাট প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০১৭, ০৯:৩১ এএম
ট্রলারডুবি: তৃতীয় দিনে আরও ৭ মরদেহ উদ্ধার

বাগেরহাট: জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীতে ট্রলারডুবির ঘটনায় নতুন করে আরও সাতটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১২টি মরদেহ উদ্ধার হলো।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৭টার দিকে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পানগুছি নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধারকারীরা ভাসমান অবস্থায় মরদেহগুলো উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত লাশের মধ্যে এক শিশু, দুই নারী ও চারজন পুরুষ রয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার ছোলমবাড়িয়া খেয়াঘাট থেকে প্রায় ৫০/৬০ জন যাত্রী নিয়ে মোরেলগঞ্জ পুরাতন থানার ঘাটে যাওয়ার পথে ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে থাকা নারী শিশুসহ ১১ জনের মৃত্যু হয় এবং নিখোঁজ হন অন্তত ১১ জন।

দুর্ঘটনার ৩য় দিন বুধবার সকাল থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।  মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বলছে, ট্রলারডুবির ঘটনায় নারী ও শিশুসহ এখনও অন্তত ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

উদ্ধার হওয়া ৬ জনের মধ্যে তিন জনের প্রাথমিক পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, মোরেলগঞ্জের বাসবাড়িয়া এলাকার সাহ আলমের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (২), কালিকাবাড়ি এলাকার সালাম সেখের ছেলে আ: রফিক (৩৫) এবং পোলেরহাট এলাকার প্রয়াত কাসেম সেখের ছেলে  আ: মজিদ শেখ (৭৫)।

ট্রলারডুবির ঘটনায় নৌবাহিনীর উদ্ধারদলের কমান্ডার শাহরিয়ার আকল জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পানগুছি নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাসমান অবস্থায় ৬টি মরদেহ নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করেছে। নিখোঁজদের সন্ধানে এখনও তল্লাসী অব্যাহত রয়েছে।

নিখোঁজদের মধ্যে যাদের নাম পরিচয় জানা গেছে তারা হলেন, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পল্লীমঙ্গল গ্রামের বাচ্চু শেখের দশ মাস বয়সী ছেলে রাহাত, একই উপজেলার বারুইখালি গ্রামে শহীদুলের স্ত্রী লাবনী (২০), একই গ্রামের নাসিম শেখের ছেলে নাজমুল শেখ (৬), আলতি বুরুজবাড়িয়া গ্রামের গফফার হাওলাদারের ছেলে সুলতান হাওলাদার (৫৫), ফুলহাতা গ্রামের মহসিনের ছেলে হাসান (৬), চিংড়াখালি গ্রামের তবিবুর রহমানের স্ত্রী মুন্নি বেগম (৪০), উত্তর সুতালড়ি গ্রামের আব্দুল আজিজের স্ত্রী কামরুন্নেছা (৫৮), পুঁটিখালি গ্রামের হালিম হাওলাদারের মেয়ে রিমা (২৬), বুরুজবাড়িয়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল গফুরের ছেলে মো. আনছার হাওলাদার (৫০), ভাইজোড় গ্রামের কালামের স্ত্রী খাদিজা (৪০), বাশবাড়িয়া গ্রামের আলম চাপড়াশির স্ত্রী সালমা (৩০), একই গ্রামের ইউনুস সরদারের স্ত্রী বিউটি (২৫) পাশ্ববর্তি শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের নাহিদ ওরফে লিটনের স্ত্রী নাছিমা (৩৫), একই উপজেলার শামছুল হুদার ছেলে আবির (১৫), পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পশ্চিম বানিপাড়া গ্রামের খলিল তালুকদারের স্ত্রী নাছিমা আক্তার (২৮)

এদিকে ট্রলার ডুবির প্রায় ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজদের সন্ধান না পেয়ে নদী পাড়ে ভিড় করেছেন স্বজনরা। উদ্ধারকারী বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি নিজেরাও ট্রলার নিয়ে নদীতে খুজে ফিরছেন তাদের নিখোঁজ হওয়া স্বজনদের।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসে উপ-সহকারি পরিচালক (ডিএডি) মাসুদুর রহমান সরদার জানান, ফায়ার সার্ভিসের চারটি দলে ভাগ হয়ে পানগুছি নদীর বদনীভাঙ্গা থেকে ফুলহাতা পর্য তল্লাসি চালানো হচ্ছে। পানগুছি নদীর দুর্ঘটনা স্থল থেকে দুই পাশের ১০ কিলোমিটার জুড়ে তল্লশি করা হচ্ছে। যেহেতু নদীতে জোয়ার-ভাটার তীব্র স্রোত রয়েছে তাই বিস্তৃত এলাকা জুড়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। নিখোঁজদের সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।  

মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, যারা নিখোঁজ হয়েছেন তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের উদ্ধার করতে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। যতক্ষণ না তাদের পাওয়া যাচ্ছে অভিযান অব্যাহত থাকবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!