শুরু হয়েছে অভিযান ‘ঈগল হান্ট’

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০১৭, ১০:২৫ এএম
শুরু হয়েছে অভিযান ‘ঈগল হান্ট’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর ত্রিমোহনি এলাকার জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন ঈগল হান্ট’ ফের শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে পূনরায় অপারেশন শুরু হয়। ওই এলাকা থেকে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

গতকাল বুধবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করে সোয়াট। অভিযান শুরুর পরেই গুলির মুহুর্মুহু শব্দ শোনা যায়। একই সঙ্গে বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

অপারেশন ‘ঈগল হান্ট’ শুরুর পর প্রথম দফার অভিযান বুধবার (২৬ এপ্রিল) রাত সোয়া ৮টায় স্থগিত করে স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স (সোয়াট) টিম। এর আগে বিশেষ এই বাহিনীর সদস্যরা বুধবার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শিবনগর পৌঁছায়। এ সময় তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি)।

প্রথম দফার অভিযান শেষে বুধবার রাতে সোয়াটের উপ-পুলিশ কমিশনার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার জানান, রাতের মত অভিযান সমাপ্ত। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে আবারও অভিযান শুরু করা হবে। রাতে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারিনি। সকালে ভেতরে না ঢোকা পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো হতাহতের তথ্য বলা যাচ্ছে না। তবে অভিযানে আপাতত কোনো আটক বা উদ্ধার নেই।

এদিকে, রাতের অভিযানের পর বর্তমানে ওই বাড়িসহ আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ। সোয়াট টিম ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছালেই শুরু হতে পারে অপারেশন ঈগল হান্টের দ্বিতীয়ভাগ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার এটিএম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রাজশাহী থেকে তিন প্লাটুন বিশেষ ফোর্স ঘটনাস্থলে রয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে সোয়াট টিম এসেছে। এখন অভিযান তারাই পরিচালনা করছে। পুলিশ কেবল তাদের বাইরে থেকে সাপোর্ট দিচ্ছে। অভিযান শেষ হলে তারা সোয়াটের কাছ থেকে ওই বাড়ির দায়িত্ব বুঝে নেবে। আপাত নিরাপত্তার স্বার্থে বাড়িটির আশপাশে কাউকে যেতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানান পুলিশ সুপার।

এর আগে গতকাল বুধবার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিটিসি) থেকে জঙ্গি সদস্য রফিকুল ইসাম ওরফে আবুর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। এই জঙ্গি সদস্যের নিজের বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুর ইউনিয়নের শিবনগর গ্রামেই। তবে ভিন্নমত অবলম্বনের কারণে বাড়ি থেকে ৯ বছর আগে আলাদা করে দেয়া হয় আবুকে।

এই সময় বিয়ে করেন আবু। বিয়ের পর প্রথম দিকে শ্বশুর বাড়িতেই থাকতো আবু। পরে নিজ গ্রামে ফিরে সাইদুর রহমান জেন্টুর ওই বাড়ি ভাড়া নেন। সে ওই বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে থাকেন। ওই বাড়ির মালিক সাইদুর রহমান জেন্টু একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।

অবাধ্য হওয়ায় ছেলেকে শাসনের সুরে বাড়ি ছাড়তে বলেছিলেন বাবা-মা। এক দিন আগে ঈদ করা, সব ইমামের পেছনে আদায় না করা, নামাজ শেষে মোনাজাত না করা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিয়ে সমাজে বিব্রত ছিলেন তারা। ধর্মপালন নিয়ে ছেলের এসব নতুন নিয়ম-কানুন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। ধর্মপালন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়ায় পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় আবুকে।

তবে আবুর দুই মেয়ের যাতায়াত ছিল এই বাড়িতে। বড় মেয়ের নাম নূরসাদিয়া নূরি (০৭) ও সুরাইয়া ইসলাম সাজেদা (৫)। এর মধ্যে ছোট মেয়ে সাজাদকে নিয়ে গত মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মা ফুসলানা বেগমের সঙ্গে দেখা করে গেছেন বলে জানিয়েছেন আবুর ছোট ভাই সবুরের স্ত্রী রুনা খাতুন। আবুর ছবির কথা জিজ্ঞেস করলে রুনা বলেন, তিনি (আবু) ছবি তোলেন না। আর ছোট বেলার ছবি বাড়ি ছাড়ার সময় নিয়ে গেছেন আবু।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!