মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া পরিবারের তিনজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু

  • মেহেরপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০১৭, ০৬:৪৭ পিএম
মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া পরিবারের তিনজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু

বড় ছেলে সবুরের পাশে বাবা তোফাজ্জেল হোসেন। এ ছবিটি এখন শুধুই স্মৃতি

মেহেরপুর: জেলায় মৃত্যুর অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা ‘ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রফি’ রোগে আক্রান্ত তিন জনের মধ্যে সবুর হোসেন (২৪) মারা গেছে। শনিবার (২২ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুর শহরের বেড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

২০০২ সাল থেকে দুরারোগ্যব্যাধী ‘ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি’ রোগে আক্রান্ত হয় সে। তার কয়েক বছর পর আক্রান্ত হয় তার ছোট ভাই রাইহানুল ইসলাম (১৫)। সম্প্রতি একই রোগে আক্রান্ত সবুর ও রায়হানের ভাগনে সৌরভ (৮)। তাদের চিকিৎসা করতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছে বাবা তোফাজ্জেল হোসেন। নিরুপায় হয়ে পরিবারের সদস্যদের মৃত্যু কামনা করে গেল ১৯ জানুয়ারি মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন তিনি।

এ খবর রেডিও টুডেসহ দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এর ভিত্তিতে ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত নিউরোজেন ব্রেইন এন্ড স্পাইন ইনস্টিটিউট তাদের চিকিৎসার ভার বহন করেন। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে আসেন তারা। কিন্তু মুক্তি মেলেনি। এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই বলে জানিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা।

মেহেরপুর জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। চিকিৎসার বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে সাধ্যমত সহযোগিতা দেয়া হয়েছিল। ভারতে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবুরকে বাঁচানো গেল না। পরিবারের আক্রান্ত অপর দুই সদস্যর প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে সবুরকে শেষ বিদায় দিতে এলাকার মানুষের ভিড় পড়েছে। পরিবারে বইছে শোকের মাতম। এক সময়ের স্বচ্ছল ফল ব্যবসায়ী তোফাজ্জেল হোসেন ভিটেমাটি সব কিছুই ছেলেদের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করেছেন। ভারতে চিকিৎসা শেষে সম্প্রতি দেশে ফিরে রোগমুক্তির আশায় ছিলেন। এমন সময় সবুরের চলে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছেন তিনি। ছেলেদের জীবন বাঁচাতে তিনি প্রাণপন চেষ্টা করেছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!