চাচা-ভাতিজার ধর্ষণে সেই স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসব! বাবা কে?

  • ফরমান শেখ, টাঙ্গাইল | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০১৮, ০৪:৫৬ পিএম
চাচা-ভাতিজার ধর্ষণে সেই স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসব! বাবা কে?

ছবি: সোনালীনিউজ

টাঙ্গাইল : চাচা ও ভাতিজার যৌন লালসার শিকার টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির সেই ছাত্রী কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। কে পিতা ধর্ষক চাচা আনছের আলী না ভাতিজা শরিফুল এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।

রবিবার (২৬ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে সে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করে। ওই হাসপাতালের গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাজমা খলিল এ অপারেশন সম্পন্ন করেন। বর্তমানে মা-মেয়ে উভয়ই সুস্থ আছে।

এর আগে শনিবার (২৫ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে ওই মেয়েটি প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বেডে ভর্তি হয়।

সরজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বেডে ওই স্কুলছাত্রী মেয়েকে নিয়ে শুয়ে আছে। জন্ম নেয়া ওই শিশুটির দেখভাল করছেন স্কুলছাত্রীর মা কমলা বেগম ও বড় বোন মরিয়ম। পাশেই নিরবে বসে আছেন বাবা আবুল হোসেন ও ভগ্নপতি মোখলেছুর রহমান। তাদের চোখে-মুখে শুধুই হতাশার ছাপ।

হাসপাতালে কথা হয় ছাত্রীর বাবা মো. আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে এমনিতেই শিশু তার মধ্যে আবার আরেকটি শিশুর মা হলো। এখন এ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে? আর পিতৃ পরিচয় কী?  আমি এই মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবো। আমি মামলা করার পরও মূল আসামি আনছের আলী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা আমার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। আমি কি এর কোনো বিচার পাবো না। নাকি আমি গরিব বলে বিচার পাওয়ার অধিকার নাই?

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী থানার এস আই মো. মনির হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি আমি শুনেছি। মামলাটি একটু জটিল। ইতিমধ্যে মামলার এক আসামি শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই স্কুলছাত্রী ও শরিফুলের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান আসামি আনছের আলীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, দরিদ্র হওয়ার কারণে কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আনছের আলীর বাসায় কাজ করতো ওই স্কুলছাত্রী। কাজের সুবাধে আনছের আলী ওই স্কুলছাত্রীকে নিয়মিত ধর্ষণ করতো। ধর্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলে তারই আপন বড় ভাই মুনসুর আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম।

পরে শরিফুল ঘটনাটি লোকজনের কাছে বলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেও মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। হত্যার ভয় দেখিয়ে ও কাউকে কিছু না বলতে ওই মেয়েকে নিষেধ করে দেয় আনছের আলী ও শরিফুল। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে চাচা-ভাতিজা প্রায়ই তাকে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে চাচা আনছের আলী ও ভাতিজা শরিফুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার করা হয় শরিফুলকে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় শরিফুল। ঢাকায় অবস্থান করায় ঘটনার মূল হোতা আনছের আলীকে গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!