জাল সনদ বিক্রি করেই কয়েক কোটি টাকার মালিক তারা!

  • আদালত প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০১৯, ০১:২৪ পিএম
জাল সনদ বিক্রি করেই কয়েক কোটি টাকার মালিক তারা!

ঢাকা : বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে গিয়ে বগুড়ায় ভুয়া ‘সনদ’ বিক্রি করে প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। গ্রেপ্তাররা হলেন-ফারারি মো. নুরুল ইসলাম (৫২) এবং তার স্ত্রী আকলিমা খাতুন (৪১)।

রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, নুরুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিভিন্ন ব্যাংকের অস্বাভাবিক লেনদেনের বিষয়টি গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নজরে আসে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অর্থের উৎস যাচাই করতে গিয়ে নুরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী সম্পর্কে বেশ চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়।

‘তারা বগুড়া শহরে ভাড়া নেওয়া একটি ভবনের মাত্র দুটি ফ্লোরে ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। অনুমোদিত এসব প্রতিষ্ঠানের আড়ালে কৌশলে অনুনোমোদিত ‘চারুকলা ডিপ্লোমা কোর্স’ এবং ‘গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান ডিপ্লোমা কোর্স’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠান খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবসা শুরু করে।’

ইব্রাহিম বলেন, ‘এই সনদ নিলে স্কুলে চাকরি পাওয়া যাবে বলে নিশ্চয়তা দিতেন নুরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী। আর এজন্য প্রতি সার্টিফিকেট থেকে তারা এক লাখ টাকাও নিতেন। সরল বিশ্বাসে গ্রামের ছেলেমেয়েরা সেখানে গিয়ে টাকা দিয়ে সার্টিফিকেট কিনে প্রতারিত হলেও কোনো কিছু বলার সাহস ছিল না।’

তদন্তকালে প্রাথমিকভাবে চারুকলা ডিপ্লোমা কোর্সের ৪৩৬ জন শিক্ষার্থীর তালিকা পাওয়া যায় জানিয়ে এই সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, এসব শিক্ষার্থী ছাড়াও আরো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে ৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের ২৪টি অ্যাকাউন্টে জমা করেছে তারা। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে সাউথ ইস্ট, আইএফআইসি, এবি, ঢাকা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক। শুধু নুরুল ইসলাম এবং তার স্ত্রীর নামে নয়, তার দুই সন্তান এবং শ্যালিকার নামেও অ্যাকাউন্ট খুলে এসব টাকা জমা করা হয়েছিল।

এরই মধ্যে তাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আদালতের আদেশের ভিত্তিতে জব্দ করা হয়েছে।

পরিদর্শক ইব্রাহিম বলেন, প্রায় এক বছর গোপন তদন্ত করে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার পর রোববার বগুড়া সদর থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এরপরেই ঢাকায় অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মানি লন্ডারিং আইনের এই মামলা ছাড়াও তাদের ‍বিরুদ্ধে এর আগে অনুমোদন ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিযোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করেছে।

এই দম্পতিকে বগুড়ায় নিয়ে সোমবার আদালতে তুলে রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তা ইব্রাহিম হোসেন। রিমান্ডে আনলে তাদের কাছ থেকে আর্থিক বিষয়ে আরো তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!