ইডেনের অধ্যক্ষ হত্যা মামলায় ২ গৃহপরিচারিকার বিরুদ্ধে চার্জশিট

  • আদালত প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম
ইডেনের অধ্যক্ষ হত্যা মামলায় ২ গৃহপরিচারিকার বিরুদ্ধে চার্জশিট

ঢাকা: শ্বাসরোধ করে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তার বাসার দুই গৃহপরিচারিকা রুমা ওরফে রেশমা ও রিতা আক্তার ওরফে স্বপনার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।

রোববার (২৫ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম সাইদুজ্জামান শরীফ চার্জশিট গ্রহণ করেন।

অপরদিকে মামলার সন্দিগ্ধ আসামি রুনা আক্তারি ওরফে রাকিবের মাকে (৪৭) মামলার দায় হতে অব্যাহতি দেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিউ মার্কেট থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শ সাফায়েত।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিউমার্কেট থানার উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন মজুমদার এর আগে গত ২১ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে দুই গৃহপরিচারিকাকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছেন । মামলার সন্দিগ্ধ আসামি রুনা আক্তারি ওরফে রাকিবের মা (৪৭) বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া তাকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন তিনি।

তদন্ত কর্মকর্তা তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, মামলার আসামি রুমা ওরফে রেশমা ও রিতা আক্তার ওরফে স্বপনা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, ময়নাতদন্ত ও জব্দকৃত আলামতের ভিত্তিতে ভিকটিম মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে হত্যার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

এদিকে, মামলার আসামি রুমা ওরফে রেশমা (২৫) পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে (৬৬) নাক মুখে ওড়না পেঁচিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বিশ ভরি স্বর্ণ, একটি স্যামসাং মোবাইল এবং নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা চুরি করে। প্রমাণ হিসাবে তার কাছ থেকে ওয়ালটন মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, আসামি রিমা আক্তার ওরফে স্বপ্না (৩৭) মিথ্যা ঠিকানা ব্যবহার করে কাজের বুয়া হিসাবে যোগদান করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মাহফুজা চৌধুরী পারভীনকে নাক মুখে ওড়না পেঁচিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে নগদ টাকা, স্বর্ণলঙ্কার, মোবাইল চুরি করেছেন। প্রমাণ হিসাবে তার হেফাজত থেকে নগদ সাত হাজার টাকা, একটি গোলাপী রংয়ের ভ্যানিটি ব্যাগ, একটি স্বর্ণের চেইন, একটি স্যামসাং জে-৭ মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

আপ্রাণ চেষ্টা করেও এজাহারে উল্লিখিত অন্যান্য চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মামলার সন্দিগ্ধ আসামি রুনা আক্তারি ওরফে রাকিবের মা (৪৭) বিরুদ্ধে মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই গ্রেফতারকৃত আসামি রুমা ওরফে রেশমা ও রিতা আক্তার ওরফে স্বপনার বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ৪১৯/৩৮১/৩০২/৩৪/৪১১ ধারার আদালতে প্রকাশ্যে বিচারের নিমিত্তে অভিযোগপত্র দাখিল করা হলো। রুনু আক্তার ওরফে রাকিবের মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে মামলার দায় হতে অব্যাহতি দানের প্রার্থনা করলাম। মামলার বাদী, সাক্ষী, আলামত মামলার ঘটনা সত্যতা প্রমাণ করবে।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সুকন্যা টাওয়ারে নিজ বাসা থেকে মাহফুজা চৌধুরী পারভীনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে পলাতক দুই গৃহপরিচারিকা রুমা ওরফে রেশমা ও রিক্তা আক্তার ওরফে স্বপ্নাসহ তিনজনকে আসামি করে নিউমার্কেট থানায় মামলা করেন মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদের গামা। আসামিরা বিশ ভরি স্বর্ণ যার আনুমানিক মূল্য দশ লাখ টাকা, একটি স্যামসাং জে-৭ মোবাইল সেট যার আনুমানিক মূল্য ষাট হাজার টাকা এবং নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় মামলার পর স্বপ্না, রেশমা ও তাদের জোগানদাতা রুনু বেগম ওরফে রাকিবের মাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। স্বপ্না ও রেশমা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা কারাগারে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!