খালেদার জামিন শুনানি শুরু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০, ১১:০৪ এএম
খালেদার জামিন শুনানি শুরু

ঢাকা: দুদকের দায়ের করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়।

আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে পাঠানো তার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি নিয়ে রাতে গুলশানে দীর্ঘ রুদ্ধদার বৈঠক করেছেন বেগম জিয়ার শীর্ষ আইনজীবীরা ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

অপরদিকে দুদকের আইনজীবী এড. খুরশীদ আলম জানান, আইনীভাবে যতপ্রকাশ চেষ্টা করা দরকার আমরা জামিন ঠেকাতে তার সবটুকুই চেষ্টা করব।  

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অ্যাডভান্স (উন্নত) ট্রিটমেন্টের (চিকিৎসার) জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কিনা, সম্মতি দিলে চিকিৎসা শুরু হয়েছে কিনা এবং শুরু হলে কী অবস্থা তা জানাতে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্যকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। 

বুধবারের (২৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে এ প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ অনুসারে বুধবার বিএসএমএমইউ থেকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) আবেদনটি উপস্থাপনের পর আদালত ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) এই আবেদনটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন।

এর আগে, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ মামলায় তার জামিন আবেদন পর্যবেক্ষণসহ খারিজ করে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। তবে আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) যদি সম্মতি দেন, তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পেয়ে বন্দি রয়েছেন খালেদা জিয়া। আপিলের পর হাইকোর্টে যা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে খালেদা জিয়া জামিন আবেদন করেন। তবে সেই আবেদন এখনো আদালতে উপস্থাপন করেননি তার আইনজীবীরা।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অন্য তিন আসামিরও।

দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য তিন আসামিরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এরপর ওই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। পরে গত বছরের ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অর্থদণ্ড স্থগিত ও সম্পত্তি জব্দ করার ওপর স্থিতাবস্থা দিয়ে দুই মাসের মধ্যে ওই মামলার নথি তলব করেছিলেন।

এরপর গত ২০ জুন বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পরে ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামিন চান খালেদা জিয়া। এ আবেদনের শুনানির পর ১২ ডিসেম্বর সেটি খারিজ হয়ে যায়।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোনালীনিউজ/এএস
 

Link copied!