সাত খুন মামলা

তারেক সাঈদকেই দুষলেন ওরা ২২ জন

  • নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০১৭, ০৮:২৪ পিএম
তারেক সাঈদকেই দুষলেন ওরা ২২ জন

নারায়ণগঞ্জ: চাঞ্চল্যকর সাত খুনের মামলায় সোমবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল ৯টার পর নারায়ণগঞ্জ কারাগারে থাকা ১৮ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। নূর হোসেন ও র‌্যাবের চার কর্মকর্তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে নিয়ে আসা হয় সকাল সাড়ে ৯টার পর।  

সকাল ১০টার দিকে এজলাসের সামনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন এবং এম এম রানাকে। আর প্রধান আসামি নূর হোসেনসহ বাকি ২০ জনকে রাখা হয় আদালতকক্ষের ভেতরে গ্রিলঘেরা গারদে।

এসময় এ হত্যাকাণ্ডের জন্য র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদকেই দুষতে দেখা গেছে অন্য সাবেক র‌্যাব সদস্যদের। বিচারক রায় পড়ার সময় সাবেক র‌্যব সদস্যরা তারেক সাঈদকে গালাগালিও করতে শোনা যায়। এ পরিণতির জন্য’ সিনিয়র কর্মকর্তাদের দোষারোপ করে এক পর্যায়ে তাদের একজন তারেক সাঈদকে উদ্দেশ্য করে বলেন- ‘শালা, তোদের জন্য আজকে আমাদের এই অবস্থা’।

এদিকে এ মামলার প্রধান আসামি সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন এবং সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন নির্লিপ্ত।

সংক্ষিপ্ত রায়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন আসামিদের যে সাজা ঘোষণা করেন, তাতে নূর হোসেন ও সাবেক তিন র‌্যাব কর্মকর্তাসহ ২৬ জনকে দেওয়া হয় মৃত‌্যুদণ্ড। মামলার ৩৫ আসামির মধ‌্যে বাকি নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন তিনি।

সাত খুনের মামলায় মোট ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার এমদাদুল হক, আরওজি-১ আরিফ হোসেন, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, ল্যান্স নায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহি আবু তৈয়ব, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দ বালা, করপোরাল রুহুল আমিন, এএসআই বজলুর রহমান, হাবিলদার নাসির উদ্দিন, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, সৈনিক নুরুজ্জামান, কনস্টেবল বাবুল হাসান ও সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর। কারাগারে থাকা বাকি আসামিরা হলেন সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, তাঁর সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দীপু, রহম আলী, আবুল বাশার ও মোর্তুজা জামান (চার্চিল)।

পলাতক আসামিরা হলেন- করপোরাল মোখলেছুর রহমান, সৈনিক আবদুল আলীম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবীর, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল হাবিবুর রহমান এবং নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনে থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিম অপহৃত হন। পরদিন ২৮ এপ্রিল ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নজরুল ইসলামের স্ত্রী। ওই মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনকে প্রধান করে ৬ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় আরও একটি মামলা করেন। ৩০ এপ্রিল বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ৬ জন এবং ১ মে সকালে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।  পরে স্বজনরা লাশগুলো শনাক্ত করেন।

সাজাপ্রাপ্ত ২৫ জনই র‌্যাবের


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Link copied!