ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আজ তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। বুধবার (৬ আগস্ট) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে হাজির করা হয়েছে রাজসাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে।
আজকের কার্যদিবসে ট্রাইব্যুনালে আরও দুই জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করবেন বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তারা সবাই জুলাই মাসে সংঘটিত গণহত্যার নৃশংস স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করেছেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে প্রত্যক্ষদর্শীরা তুলে ধরেন সেই বিভীষিকাময় সময়ের নানা চিত্র—নিরীহ মানুষের ওপর চালানো বর্বর নির্যাতন, নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ও নিখোঁজের ঘটনাগুলোর ভয়াবহ বর্ণনা। আদালত প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল এক আবেগঘন পরিবেশ। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের দাবিতে আদালতের বাইরে বিভিন্ন সংগঠন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে অবস্থান নেন।
এর আগে, চলতি বছরের ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে অভিযুক্ত করা হলেও তারা বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে আদালতকে জানানো হয়। অন্যদিকে, অভিযুক্ত সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।
একই দিনে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাইদ হত্যা মামলার ছয় আসামিকে। এই মামলায় আজ অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার কথা রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর। মামলাটি নিয়ে অঞ্চলজুড়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ ও আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে চলমান এই মামলাটি দেশজুড়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের নাম এতে জড়িত থাকায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো। আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহলেও চলছে ব্যাপক আলোচনা।
ওএফ
আপনার মতামত লিখুন :