ব্যবসায়ী ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলম (এস আলম)–এর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন অনুমোদনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা মেমো কার্যকর নয়—এমন আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আপাতত তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবেই বিবেচিত থাকবেন।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুলসহ এই স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম ও আইনজীবী আবদুল্লাহ আলম মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
২০২০ সালের ১৯ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এক মেমোতে জানায়, সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গ্রহণের পর সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন সরকার অনুমোদন করেছে। চলতি মাসে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পক্ষে এই অনুমোদনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়।
রিটকারী পক্ষের আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূমের অভিযোগ, এস আলম প্রতারণামূলক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন—যাতে দেশে নেওয়া বিপুল অঙ্কের ঋণের দায় পরিশোধ এড়ানো যায় এবং ভবিষ্যতে বিদেশি নাগরিক পরিচয়ে আইনগত সুরক্ষা পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, একদিকে আন্তর্জাতিক সালিশি ট্রাইব্যুনালে নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করলেও, অন্যদিকে দেশীয় ব্যাংকগুলোর নথিতে নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন এস আলম। ইসলামী ব্যাংকের কাছেই তার এক হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে।
রুলে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে—কীভাবে সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত সাইফুল আলমকে কূটনৈতিক মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করা এবং ব্যাংক–গ্রাহকদের টাকা উদ্ধার নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হবে না।
হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশের ফলে নাগরিকত্ব ত্যাগ সংক্রান্ত সরকারি মেমো আপাতত অকার্যকর থাকবে এবং এস আলম বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বহাল থাকবেন।
এম
আপনার মতামত লিখুন :