সাগরে ৩ দিন ঘুরিয়ে মালয়েশিয়া বলে সেন্টমার্টিনে নামিয়ে দিত তারা 

  • চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২২, ০৩:০৩ পিএম
সাগরে ৩ দিন ঘুরিয়ে মালয়েশিয়া বলে সেন্টমার্টিনে নামিয়ে দিত তারা 

ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম : কম খরচে অসহায় ও দরিদ্রদের মালয়েশিয়ায় পাঠানোর কথা বলে টাকা নেওয়ার পর ট্রলারে তুলতো চক্রের সদস্যরা। এরপর তিন-চার দিন সাগরে ঘোরানোর পর রাতের আঁধারে নামিয়ে দেওয়া হতো সেন্টমার্টিন দ্বীপে। আর এমন একটি মানবপাচারকারী চক্রের পাঁচ সদস্যকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও কক্সবাজারের পেকুয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৭। 

সোমবার (১১ এপ্রিল) চট্টগ্রামের চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

তিনি বলেন, মানবপাচারকারী চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন-মো. ইসমাইল (৩২), শফিউল আলম (৩৭), রিয়াজ খান রাজু (৪১), মো. হোসেন (৬০) ও মো. ইউনুছ মাঝি (৫৬)। রবিবার চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী এবং পেকুয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের চারজনই চক্রের মূলহোতা।

এস এম ইউসুফ বলেন, সম্প্রতি ১৫-২০ জন ভুক্তভোগী গভীর রাতে পেকুয়া থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়। ২-৩ দিন গভীর সাগরে ঘোরাফেরার পরে মালয়েশিয়া পৌঁছেছে বলে রাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে সবাইকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। সকাল হলে ভুক্তভোগীরা বুঝতে পারে তাঁরা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। দ্বীপে কয়েক দিন মানবেতর জীবনযাপন করে পরে ভুক্তভোগীরা যে যার মতো করে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। কয়েকজন ভুক্তভোগী যাবের কাছে চক্রটির বিষয়ে অভিযোগ করেন। পরে পেকুয়ায় তাঁদের একটি বৈঠক থেকে ৫ জনকে আটক করেন। এছাড়া কতজন এভাবে যাওয়ার সময় মারা গেছেন তারও সঠিক তথ্য নেই। তাদের কাছ থেকে ৩১টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক বলেন, মানবপাচার চক্রের মূলহোতা হচ্ছে আপন দুই ভাই ইসমাইল হোসেন ও শফিউল আলম। তারা মূলত মানুষ সংগ্রহ করে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য। তারা কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানা এলাকার নিরীহ মানুষদের দারিদ্র্যের সুযোগে স্বল্প খরচে বিদেশ পাঠানোর জন্য চুক্তি করত। এরপর তাদের কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখত। তারপর কিছু টাকার বিনিময়ে মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী প্রার্থীদের পাসপোর্ট বানানোর জন্য তাদের অন্যতম সহযোগী রিয়াজ খান রাজুকে দায়িত্ব দিত।

তিনি বলেন, দুই ভাইয়ের নামে মানবপাচার আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে সাতটি করে মামলা আছে। আসামি রিয়াজ খান রাজু মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহীদের পাসপোর্ট তৈরির কাজ শেষ করে দিত। পরে চক্রটি পাসপোর্ট করা মানুষকে বলত তাদের মাধ্যমে স্বল্প খরচে মালয়েশিয়া যাওয়া সম্ভব।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Link copied!