ফ্যামিলিটেক্সকে সচল করতে ৭ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০২১, ০৮:৫১ এএম
ফ্যামিলিটেক্সকে সচল করতে ৭ স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ

ঢাকা: শেয়ারবাজারের বস্ত্র খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফ্যামিলিটেক্স বিডির পরিচালনা পর্ষদে ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে ‘জেড’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ৭ জন স্বতন্ত্র পরিচালক কোম্পানিটির উৎপাদন সচল করার পাশাপাশি আর্থিক অবস্থার উন্নয়নে কাজ করবে।

ফ্যামিলিটেক্সে জন্য বিএসইসির মনোনীত স্বতন্ত্র পরিচালক হলেন, ড. নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ,কাজী আমিনুল ইসলাম, ড. সামির কুমার শীল, ড. গাজী মোহাম্মদ হাসান জামিল, ড. মো. জামিল শরিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ এহসান ও ড. মো. ফরজ আলী।  তাদের মধ্যে কোম্পানিটির চেয়ারম‌্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন , ড. নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথ।

‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির জন্য গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার ২ নম্বরে উল্লেখ রয়েছে,  ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে যাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত পর্ষদে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডার পরিচালকরা পুনরায় পরিচালক হওয়ার সুযোগ পাবেন। 

সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সব পরিচালকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।  

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলিটেক্স বিডি ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর মূল মার্কেট থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এরপর কোম্পানিটির কোনো উন্নতি হয়নি। এছাড়া, সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা বা পরিচালকরা মাত্র ৪.০২ শতাংশ শেয়ার ধারনের মাধ্যমে বিএসইসির সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে। অথচ কোম্পানিটির ৭৫.৫৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারী এবং ১৮.৪১ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ারধারণ করেও বিগত দুই বছর ধরে কোনো লভ্যাংশ পাচ্ছেন না। এ বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতিকারক ও কমিশনের কাছে অপ্রত্যাশিত।

কমিশন লক্ষ্য করেছে, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি আগে অর্থাৎ ২০১১ থেকে ২০১২ সালে ফ্যামিলিটেক্সের মুনাফা ৪৩৮ গুণ বেড়েছিল। আর তালিকাভুক্তির সময়ে অর্থাৎ ২০১২ থেকে ২০১৩ সালে মুনাফা বেড়েছিল ৭৬ শতাংশ।

কোম্পানিটির এ মুনাফা বৃদ্ধির এর ধারাবাহিকতা কেবল ২০১৪ সাল পর্যন্ত বজায় ছিল। আর ২০১৬ সাল থেকে কোম্পানির মুনাফা অস্বাভাবিকভাবে কমতে থাকে। ওই সময়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিল মোহাম্মদ মোর্শেদ এবং চেয়ারম্যান রোকসানা আরা। তারা কোম্পানিটির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কোম্পানিটির নিট মুনাফা আকস্মিকভাবে কমতে থাকে।

কমিশন মনে করে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনা করে ফ্যামিলিটেক্সের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে কমিশন।

এর আগে আলহাজ্ব টেক্সটাইল ও রিং সাইন টেক্সটাইলসের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। 

এর ফলে কোম্পানি দু’টির কার্যক্রমে ভালো ফল পেতে শুরু করেছেন বিনিয়োগকারীরা। বিশেষ করে রিং সাইন পুনর্গঠন করার পর ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের পর্ষদ পুনর্গঠন করার পর বিনিয়োগকারীদের ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।  এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দুর্বল কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করছে বিএসইসি।

অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বিএসইসির ৭৩৫তম সভায় ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়।এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অনেকাংশে ফিরেছে।

পর্ষদ পুনর্গঠনের বিষয়ে ফ্যামিলিটেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাবাসসুম করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

প্রসঙ্গত,  প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ২০১৩ সালে ফ্যামিলিটেক্স সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। ওই বছর কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ঠিক পরে বছর ২০১৪ সালে কোম্পানিটি মাত্র ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়। এরপর ২০১৫ সালের কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। আর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোম্পানি মাত্র ৫ শতাংশ করে বোনাস লভ্যাংশ দেয়েছে বিনিয়োগকারীদের। আর ২০১৯ ও ২০২০ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। যার ফলে কোম্পানিটির ২০১৯ সাল থেকেই ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে।

 দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সোনালীনিউজ/আরএইচ/এইচএন

Link copied!