ঢাকা: ব্যাংকবহির্ভূত কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন কার্যত মৃতপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না, আবার নতুন আমানতও পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে খাতটিকে টিকিয়ে রাখতে প্রথম ধাপে ২০টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমানত ফেরত না দেওয়া, উচ্চ খেলাপি ঋণ এবং মূলধন ঘাটতি—এই তিন সূচকের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০২৪ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। দুর্বল ব্যাংকগুলোর ১৪টি পর্ষদ বিলুপ্ত করা হয়, প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা নতুন মুদ্রা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়। ছোট অঙ্কের আমানতকারীরা আংশিক অর্থ তুলতে পারলেও বড় অঙ্কের সঞ্চয় ফেরত পাওয়া এখনো অনেকের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে আছে। কিছু দুর্বল ব্যাংক মাসে নির্ধারিত পাঁচ হাজার টাকাও দিতে পারছে না; শাখা ব্যবস্থাপকরা শুধু গ্রাহকদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিমা খাতের শোচনীয় অবস্থা: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে বীমা খাতেরও সমান উন্নতি ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে এ খাতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নন-লাইফ ৪৬ কম্পানির কাছে মোট দাবি জমে তিন হাজার ৪৪৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে মাত্র ২৯৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা—যা মোট দাবির মাত্র ৯ শতাংশ। অর্থাৎ বাকি ৯০ শতাংশ দাবিই এখনো অনিষ্পন্ন।
ঋণ প্রবৃদ্ধি ও আস্থার সংকট: ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর থেকে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের জুনে নেমে এসেছে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী বলেন, “বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের আস্থায় নিতে পারেনি। ফলে বেসরকারি খাত ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পিছিয়ে আছে। তবে নির্বাচনের ঘোষণা কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে।”
ওএফ
আপনার মতামত লিখুন :