চিনির শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০১৬, ১০:৪৪ পিএম
চিনির শুল্ক কমানোর কথা ভাবছে সরকার

ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে চিনির শুল্ক কমানোর চিন্তা করছে সরকার। খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭২ টাকা দরে। স্থানভেদে দর আরো বেশি। বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি আমদানিতে সরকার নির্ধারিত শুল্ক ২০ টাকারও বেশি। এতে সরকারি কোষাগার স্ফীত হলেও জনগণের পকেটের ওপর চাপ বাড়ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এক বছর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন চিনির দর ছিল ৩২৯ ডলার। বর্তমানে সে দর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯০ ডলারে। বিশ্ববাজারে চিনির দরের এ উল্লম্ফনে গত ছয মাসে দেশের বাজারে চিনির দর বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৩২ টাকা।

কিন্তু এর পরও মাসখানেক আগে কেজি প্রতি পাঁচ টাকা দর বাড়ানোর দাবি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন শীর্ষ চিনি উৎপাদকরা। কারণ হিসেবে প্রতি কেজি চিনি আমদানির চেয়ে বর্তমান বাজারদর কম বলে দাবি করেছিলেন তারা।

অন্যদিকে গত মে মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাজার স্থিতিশীল রাখতে চিনি আমদানির ওপর সরকারি ট্যাক্স প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছিল।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমদানি করা পণ্যের দর নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে কঠিন। তাই বলে মন্ত্রণালয় হাল ছেড়ে বসে নেই। আমরা সারাক্ষণ বিশ্ববাজারের সঙ্গে দেশের চলমান বাজারের সামঞ্জস্য মনিটরিং করি। কিন্তু আপনি তো মুক্তবাজার অর্থনীতির দেশে ক্রয় দরের চেয়ে কম দরে পণ্য বিক্রি করতে কাউকে বাধ্য করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, আমরা সারাক্ষণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। দাম কমানোর পদ্ধতি নিয়ে নিজেরাও আলোচনা করছি। ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর আবদার নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা আমলে নেইনি। বরং ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে কিভাবে দর কমানো যায়, সে বিষয়েও চিন্তা করছে সরকার।

সিনিয়র সচিব বলেন, দেশের চিনির মিলগুলোর কথা চিন্তা করে সরকার চিনি আমদানিকে নিরুৎসাহিত করেছিল। এ জন্য এ বছরের শুরুতেই চিনি আমদানিতে কেজি প্রতি ১৪ টাকা ট্যাক্স ধার্য করেছিল সরকার। বর্তমানে যা দাঁড়িয়েছে কেজি প্রতি ২০ টাকার ওপর। দেশের সরকারি মিলগুলোতে আগে হাজার হাজার টন চিনি অবিক্রীত পড়ে থাকলেও গত রমজানেই চিনি মিলগুলোর গুদাম ফাঁকা হয়ে গেছে। এখন মিলগুলোর কাছে আর কোনো চিনি নেই। এ অবস্থায় সরকার চিনি আমদানির ওপর ধার্য করা ট্যাক্স তুলে দেয়ার চিন্তা করছে।

তিনি জানান, এ নিয়ে অচিরেই শিল্প মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।

এর আগে গত ৯ মে চিনি আমদানিতে সরকারি ট্যাক্স আরোপের ফলে দর বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তারা ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতার কথা চিন্তা করে এ ট্যাক্স প্রত্যাহারেরও সুপারিশ করেছিল।

সংসদীয় কমিটি ওই সুপারিশে বলেছিল, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিল চালিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় এমনিতেই চিনির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে ফেলে। ফলে তাদের চিনি বিক্রি হয় না। এই ক্ষতি পোষাতে সরকার জনগণের পকেট কাটতে পারে না।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

অর্থনীতি বিভাগের সাম্প্রতিক খবর

Link copied!