ফাইল ছবি
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির মধ্যে নবম পে-স্কেলের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা নির্বাচনের আগে কার্যত অনিশ্চিত হয়ে গেছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘পে-স্কেল ঘোষণা করা সহজ কাজ নয়, এতে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। কর্মচারীদের আলটিমেটামের মধ্যে এত কম সময়ের মধ্যে তা সম্ভব নয়। আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও উন্নয়নের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের দরিদ্রতা বৃদ্ধি, প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া, আইনের দুর্বলতা, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক জটিলতাকে এই বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
সরকারি চাকরিজীবীরা ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের দাবি জানিয়েছিলেন। তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘোষণার অভাব হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে কঠোর কর্মসূচি শুরু করা হবে। তবে সূত্রের খবর, কমিশনের সুপারিশ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক সমন্বয় ও নির্বাচনি প্রস্তুতি পে-স্কেল বাস্তবায়নকে বিলম্বিত করছে।
কমিশনের প্রস্তাবে মূল বেতন সংশোধন, গ্রেড পুনর্বিন্যাস ও ভাতা কাঠামোতে বড় পরিবর্তনের সুপারিশ রয়েছে। এগুলো কার্যকর করতে অর্থ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের মধ্যে আরও কয়েক দফা বৈঠকের প্রয়োজন। কিন্তু নির্বাচনের কারণে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলো প্রার্থীদের তালিকাভুক্তি ও নির্বাচন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকায় পে-স্কেল কার্যক্রম পিছিয়ে গেছে।
চাকরিজীবী সংগঠনগুলো বলছে, নতুন সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত পে-স্কেল কার্যকর হবে না। নীতিনির্ধারকরা জানাচ্ছেন, নতুন বেতন কাঠামো দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। অর্থনৈতিক সক্ষমতা, বাজেট ভারসাম্য, মুদ্রাস্ফীতি ও সরকারি ব্যয়ের চাপ বিশ্লেষণ ছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।
সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পে-স্কেল সংক্রান্ত আলোচনাগুলো অনিশ্চিত সময়ের জন্য স্থগিত থাকতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতিতে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘ দিনের অপেক্ষা আর নির্বাচনের আগে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা দুইপাশেই ফাঁকফোকর রেখে যাচ্ছে। নির্বাচনের চাপ ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার মাঝে পে-স্কেল বাস্তবায়ন এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :