লাখ টাকা থাকলেই সম্পদশালী: অর্থমন্ত্রী

  • জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২, ২০১৭, ১০:৪৪ পিএম
লাখ টাকা থাকলেই সম্পদশালী: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা: ব্যাংক হিসাবে যাদের এক লাখ টাকার বেশি আছে, তারা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সম্পদশালী বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এজন্য লাখ টাকার লেনদেন হলেই ১ হাজার টাকা আবগারী শুল্ক নির্ধরণ করেছেন তিনি।

শুক্রবার (২ জুন) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়াতনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। সহযোগিতা করতে মঞ্চে ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম প্রমুখ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী  মুহিত বলেন, যারা ব্যাংকে এক লাখ টাকার বেশি রাখবেন, তাদের বেশি আবগারী শুল্ক আরোপ করা হবে। বড় লোকের ডেফিনেশন (সংজ্ঞা) দেয়া মুসকিল। যারা একলাখ টাকা ব্যাংকে রাখতে পারেন, তারা আমাদের দেশের তুলনায় সম্পদশালী। তারা বাড়তি ভারটা বহন করতে পারবেন,সমস্যা হবে না ।

এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২২৬ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করা হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মুহিত ব্যাংক হিসাবে রাখা আমানতের উপর আবগারী শুল্ক বাড়ানোর কথা বলেছেন। ব্যাংক হিসাবের উপর ধার্য করা নতুন আবগারী শুল্ক অনুযায়ী এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত রাখলে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। তবে এক লাখ টাকার উপর থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাখলে ৮০০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হবে। যা বর্তমানে আছে ৫০০ টাকা।

নতুন বাজেটে আবগারি শুল্ক আরোপের সীমা ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে বছরের যে কোনো সময় ২০ হাজার টাকা লেনদেনে শুল্ক আরোপ করা হতো, এখন ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনে শুল্ক আরোপ করা হবে না। নতুন বাজেট প্রস্তাবে ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনে বিদ্যমান ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ১ লাখ টাকার লেনদেনে এখন ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক আরোপ করা আছে। এখন সেটা আর দিতে হবে না। আবগারি শুল্ক বাড়ানোর এ সিদ্ধান্তে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে ‍নিরুৎসাহিত হবে বলে যে সমালোচনা রয়েছে তা নাকচ করে দেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাদের টাকা এক লাখের উপরে থাকবে কেবল তাদের উপরই একটা কর ধার্য্য করেছি। বড়লোকের ক্ষেত্রে আমাদের করটা ছিল, কিন্তু যারা মিড লেভেলে ছিল তারা এর অন্তর্ভুক্ত ছিল না। একলাখ টাকার নিচে যারা আছেন, তাদের ভার থেকে মুক্ত করাই যথেষ্ট।

নতুন বাজেটে ব্যাংক একাউন্টে লেনদেন ১ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হতে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা, ১০ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হতে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হতে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিদ্যমান ১৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

তবে বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতার পর ব্যাংক লেনদেনে আবগারি শুল্ক আরোপের ভিন্ন হার উল্লেখ করে এনবিআরের এক প্রজ্ঞাপন জারি করলে সংশয়ের সৃষ্টি হয়। সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, এক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটে আবগারি শুল্ক আরোপের হার চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Link copied!