পাকিস্তান ও নিজামীর সম্পর্ক এক ও অভিন্ন

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৩, ২০১৬, ০৪:১৮ পিএম
পাকিস্তান ও নিজামীর সম্পর্ক এক ও অভিন্ন

মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় ও তা কার্যকরকে ঘিরে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন করে উত্তাপ ছড়িয়েছে। এরমধ্যে ফাঁসির রায়ের পর বিবৃতি এবং তা কার্যকরের পর সংসদে শোক প্রস্তাব ও বিবৃতি দেয় পাকিস্তান। জবাবে ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার সুজা আলমকে দু’দফায় তলব করে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ। পাল্টা পাকিস্তানও বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাজমুল হুদাকে তলব করে নিজেদের এ অবস্থানের কথা জানালো।

আসলে পাকিস্তান বাংলাদেশের জন্মকে এখনো মেনে নিতে পারেনি। তারা তাদের মৃত পূর্ব পাকিস্তানকে আবারো দেখতে চায়। তারা বিগত ৪৫ বছরের ইতিহাসকে মানতে নারাজ। ওরা বলছে, নিজামী কোন অন্যায় করেনি, সে শুধু বাংলাদেশ যেন সৃষ্টি না হয়, পাকিস্তান যেন টিকে থাকে সে চেষ্টাই করেছে শুধু। তাদের দৃষ্টিতে নিজামী সাচ্চা পাকিস্তানি বলেই ১৯৭১ সালে আল বদর প্রধান হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছে, অন্য কিছু নয়। তারা নিজামীর নেতৃত্বে গনহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট সব কিছুকে পাকিস্তান রক্ষার ভুমিকা বা সঠিক কাজ বলে অভিহিত করতে চায়।

যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরের পর পাকিস্তানের সংসদে যে শোক প্রস্তাব উঠেছে এবং তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে শোক বিবৃতি দিয়েছে সে অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাজমুল হুদাকে তলব করে এ অবস্থান জানিয়েছে তারা। জবাবে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে বাংলাদেশের অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন পাকিস্তানকে।

এদিকে, মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকরকে নিয়ে করা পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও চরম কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। দন্ড কার্যকরের পরে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করেছে নিজামীর ফাঁসি যৌক্তিক ছিল। কারণ পাকিস্তানই বলেছে ১৯৭১ সালে মতিউর রহমান নিজামী পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে সমস্ত কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে। তবে কুখ্যাত এ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকরের পর পাকিস্তান যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তা ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও চরম কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই আমরা আশা করি, পাকিস্তান ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কোনো অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কথা বলবে না।

আসলে নিজের মানুষের মৃত্যুদন্ড কর্যকর হতে দেখাটা সবারই খারাপ লাগার কথা। তাই পাকিস্তান সরকারেরও খারাপ লেগেছে। খাঁটি পাকিস্তানি হিসেবে নিজামী ১৯৭১ সালে যে সব কাজ করেছে তার জন্য পাকিস্তান সরকার ও তাদের লোকজনদের  গর্ববোধ হতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের কাছে নিজামী নরকের কীট। তার বিচার হওয়ায় এবং সে বিচারের রায় কার্যকর হওয়ায় বাংদেশের মানুষেরা গর্বিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের  ধারা অব্যাহত থাকুক এটাই বাংলাদেশের মানুষের কামনা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Link copied!