শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হোক

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০১৬, ১২:১৫ পিএম
শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হোক

প্রাথমিকে শিশুর শরীরে ১০ শতাংশের বেশি ওজনের বইয়ের ব্যাগ বহন নিষেধ করে ছয় মাসের মধ্যে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহন না করতে দেশের সব বাংলা ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ৩০ দিনের মধ্যে একটি সার্কুলার জারি করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই আদেশ না মানলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুল মঞ্জুর করে বুধবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।  হাইকোর্টের এ রায় বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক। শিক্ষার নামে শিশুদের পিঠে ভারী ভারী ব্যাগ তুলে দেয়া আর তাদের শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা, এটি সভ্যতাবিনাশী এক অমানবিক পন্থা এর অবসান হওয়া উচিত।

পৃথিবীর অনেক দেশেই স্কুলশিশুদের ব্যাগ বহনে আইন রয়েছে। কেননা ভারী ব্যাগ বহনে শিশুর স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। যদি শিশুর স্বাস্থ্যই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, তবে সে শিশু কিভাবে পড়ালেখা করবে। আমরা জানি, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আর তা যদি বাস্তবিক অর্থেই বিশ্বাস করি, তা হলে শিশুদের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় তার খেসারত জাতিকে দিতে হবে। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান জার্নাল অব পেডিয়াট্রিকসের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৩০ শতাংশ শিশু বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের কারণে পিঠের ব্যথায় ভোগে। আরেক প্রতিবেদনে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, বেশি ওজনের ব্যাগ বহনের কারণে শিশুদের স্থায়ী শারীরিক ক্ষতি হয়ে থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে হাড়ের কাঠামো ঠিক হয়। এ সময় বেশি ওজন বহন করা একেবারে অনুচিত। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতেও শিশুরা এভাবে ভুগছে। গত বছর দেশটির ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিল সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ভারী ব্যাগ বহনের কারণে শিশুদের মেরুদণ্ডের স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে। সে প্রাসঙ্গিকতায় আমরা বলতে চাই, সার্বিক বিষয়গুলোকে পর্যবেক্ষণ করে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের যে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট, তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক। সংশ্লিষ্টদের হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি এটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রেও পড়ালেখার বিষয়ে চাপ কতটুকু পড়ছে। কেননা শিশুর বয়স অনুযায়ী যদি পড়ালেখার চাপ বেশি হয়, তবে তাদের মানসিক ক্ষতির বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে শিশুর যথাযথ সুরক্ষা এবং মানসিক বিকাশ নিশ্চিত করতে শারীরিক বিষয়ের পাশাপাশি মানসিক অবস্থানকেও আমলে নিতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। 

আমরা চাই হাইকোর্টের রায়ের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশে অন্তরায় সৃষ্টিকারী সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার অবসান ঘটুক। এর পাশাপাশি শিশুশ্রম রোধসহ সব ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতির অবসান হোক- যেন শিশুর বেড়ে ওঠা কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয়। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/


 

Link copied!