ঢাকা: সারাদেশে কয়েক হাজার সরকারি-বেসরকারি কলেজ থাকলেও কিছু কিছু কলেজের মান নিয়ে আছে প্রশ্ন। বেশ কিছু কলেজের বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতি ও টাকার বিনিময়ে ভালো ফল বাগিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। এক অনুসন্ধানে এসব মানহীন কলেজের কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। বছরের পর বছর শিক্ষার্থী না পাওয়ায় নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মরিয়া এসব কলেজ।
এদের কারো কারো বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অজান্তে আবেদন করিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। এমনই বেশ কিছু কলেজের তথ্য নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সতর্ক করার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থী না পাওয়া কলেজগুলো নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন সাজানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের এমন কিছু কলেজের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, যাদের যথাযথ অবকাঠামো বা ক্লাসরুম না থাকলেও কলেজ পরিচয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পায়তারা করছে। এদের কেউ ভাড়াবাড়িতে আবার কখনো বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের রুম ভাড়া করে চলছে এসব কলেজ। কারো অস্তিত্ব আছে শুধু ফেসবুকে। গত শিক্ষাবর্ষেও কাঙ্খিত শিক্ষার্থী পায়নি ক্লাসরুম সর্বস্ব এ কলেজগুলো।
এ তালিকায় প্রথমেই আছে রাজধানীর মগবাজার এলাকার ন্যাশনাল ব্যাংক পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানে গত শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল গুণে গুণে মাত্র ৯ জন শিক্ষার্থী।
তেজগাঁও এলাকার সিভিল এভিয়েশন কলেজ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, গত শিক্ষাবর্ষে একজন শিক্ষার্থীও না পাওয়ায় চলতি বছর ফ্রি আবেদন করার প্রলোভন দেখাচ্ছে কলেজটি।
তেজগাঁওয়ের আদর্শ হাই স্কুল এন্ড কলেজে গতবছর একাদশ শ্রেণিতে কেউ ভর্তি হয়নি।
তেজগাঁওয়ের সিটি রয়েল কলেজও গতবছর কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি।
একইভাবে একাদশ শ্রেণিতে গত শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থী পায়নি রাজধানীর সাতমসজিদ রোডের ঢাকা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ।
গ্রীনরোডের আনোয়ার আইডিয়াল কলেজেও গতবছর কেউ ভর্তি হয়নি।
রাজধানীর উত্তরার বৈকাল কলেজ। গত শিক্ষাবর্ষে কলেজটির একাদল শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি।
তালিকায় আছে উত্তরা অন্বেষণ মডেল কলেজ। গত শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থী পায়নি কলেজটি।
উত্তরার হলি চাইল্ড কলেজেও কত শিক্ষাবর্ষে কেউ ভর্তি হয়নি।
উত্তরার স্টামফোর্ড কলেজে গত শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি।
তালিকায় আরও আছে মিরপুরের সমতা কলেজ। গতবছর কলেজটিতে ভর্তি হয়েছিল গুণে গুণে মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী।
মিরপুর এলাকার খান ইন্টারন্যাশনাল কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে মাত্র একজন শিক্ষার্থী পেয়েছে।
মিরপুরের হলি ফ্যামিলি পাবলিক কলেজে গতবছর ভর্তি হয়েছিল মাত্র ১জন শিক্ষার্থী।
মিরপুরের গাবতলী এলাকার হলি ফ্লাওয়ার মডেল কলেজও গতবছর কোন শিক্ষার্থী পায়নি।
আর মিরপুরের সরোজ ইন্টারন্যাশনাল কলেজ গত শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পেয়েছিল গুণে গুণে মাত্র পাঁচ জন।
এরপর আছে রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকার রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে গুনে গুনে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী পেয়েছে।
এরপর আছে রামপুরা এলাকার আল ফুরকান ইংলিশ হাই স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ। গতবছর কলেজটিতে ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৪জন শিক্ষার্থী।
রাজধানীর চৌধুরীপাড়ার ভার্সেটাইল মডেল কলেজেও গতবছর ভর্তি হয়েছিল মাত্র ১০ জন শিক্ষার্থী।
তালিকায় আরও আছে খিলগাঁও এলাকার ঢাকা ন্যাশনাল গার্লস কলেজ গতবছর পেয়েছিল মাত্র ৭জন ছাত্রী।
রাজধানীর বনশ্রী এলাকার নভেলটি স্কুল এন্ড কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে এ কলেজে গুণে গুণের ১০ জন শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল।
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার প্রাইম সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজে গত শিক্ষাবর্ষে এই কলেজে কেউ ভর্তি হয়নি।
আছে রাজধানীর মালিবাগ এলাকার ঢাকা অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ। গতবছর একাদশ শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থী পায়নি কলেজটি।
যাত্রাবাড়ী এলাকার নর্দান ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি কলেজ। কত শিক্ষাবর্ষে কলেজে মাত্র ৪ জন শিক্ষার্থী পেয়েছিল।
বাড্ডার হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজে গতবছর মাত্র ৯ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল।
খিলগাঁওয়ের অক্সফোর্ডিয়ান ল্যাবরেটরি কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে কোন শিক্ষার্থী পায়নি।
মতিঝিলের ওয়েস্টার্ন কলেজও গত শিক্ষাবর্ষের কোন শিক্ষার্থী পায়নি।
পদ্মকানন রোডের সেন্ট্রাল আইডিয়াল কলেজেও গত শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থীই পায়নি।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা ইডেনবার্গ ইন্টারন্যাশনাল কলেজে গতশিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৩জন।
মোহাম্মদপুরে ট্রিনিটি কলেজেও গত শিক্ষাবর্ষে কেউ ভর্তি হয়নি।
মোহাম্মদপুরের সানওয়ে স্কুল এন্ড কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে মাত্র একজন শিক্ষার্থী পেয়েছিল।
পল্লবীর দ্যা অস্ট্রালেসিয়ান কলেজ গত বছর কোন শিক্ষার্থী পায়নি।
আর কেরানীগঞ্জের লাইসাম কলেজেও গত শিক্ষাবর্ষে কেউ ভর্তি হয়নি।
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার নবাবগঞ্জ পাইলট হাই স্কুল এন্ড কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে একজনও শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি।
তালিকায় আরও আছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মেদিনীমন্ডল গার্লস কলেজ। এ কলেজে গত বছর ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৫ জন ছাত্রী।
একইভাবে টঙ্গীর পূবাইল কমার্স কলেজ শিক্ষাবর্ষে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি।
গাজীপুরের বর্ণমালা আইডিয়াল কলেজ গত বছর শিক্ষার্থী পেয়েছিল ৮ জন।
গাজীপুরের বাঁধন মাল্টিলিটারাল স্কুল এন্ড কলেজ গতবছর কোন শিক্ষার্থী পায়নি।
রাজেন্দ্রপুরের সাইনবোর্ড মডেল কলেজ পেয়েছিল ৭জন শিক্ষার্থী।
সাভারের নিউ সৃষ্টি কলেজে গত শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিল ৪জন ছাত্রী।
অপরদিকে ধামরাই মডেল কলেজ গতবছর কোন শিক্ষার্থীই পায়নি।
নারায়ণগন্জের ইকরা কমার্স কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে ৫জন শিক্ষার্থী ভর্তি করেছিল।
মানিকগঞ্জের ন্যাশনাল রেসিডেন্সিয়াল কলেজ গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী পেয়েছিল মাত্র ৯জন।
মানিকগঞ্জের অক্সফোর্ড একাডেমিও গতবছর একাদশ শ্রেণিতে কোন শিক্ষার্থীই পায়নি।
মানিকগঞ্জের ডা. আব্দুর রহমান খান মহিলা কলেজ। গত শিক্ষাবর্ষে এ কলেজে ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৬ জন ছাত্রী।
তালিকায় আরও রয়েছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি কলেজ। গতবছর কলেজটিতে মাত্র ৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল।
নরসিংদীর রায়পুরা মডেল কলেজেও কেউ ভর্তি হয়নি গত শিক্ষাবর্ষে।
টাঙ্গাইলের বড়গ্রাম হাই স্কুল এন্ড কলেজ গতবছর কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারেনি।
রাজবাড়ীর জঙ্গল সম্মিলনী আদর্শ হাই স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেণিতে গত বছর ভর্তি হয়েছিল ১০ জন শিক্ষার্থী।
গোপালগঞ্জের ধ্রুবসুর আদর্শ কলেজে গতবছর ভর্তি হয়েছিল ৪জন শিক্ষার্থী।
এরপর আছে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ। গত শিক্ষাবর্ষে এ কলেজে ভর্তি হয়েছিল মাত্র ৫ জন ছাত্রী।
সোনালীনিউজ/এইচএন
আপনার মতামত লিখুন :