কোচিং ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০১৮, ১২:৫৫ পিএম
কোচিং ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার

ঢাকা : রাজধানীর শতাধিক কোচিং প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। ব্যবসায় জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) মাঠে নামছে।

কোচিং ব্যবসায় জড়িত থাকলে এক বছরের জেল ও জরিমানার বিধান আছে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়ায়। মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য খসড়াটি শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে।

পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক দিন আগে থেকে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা, সেগুলোর কার্যক্রমের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুরোধ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। দুই মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক কর্মকর্তা এসব তথ্য জানান।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা কোচিং নিষিদ্ধ করে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছি। কেউ শিক্ষা আইনের খসড়ায় অবৈধ কোচিংকে বৈধতা দিতে পারবেন না। শিক্ষকরা কোচিংয়ে জড়িত থাকলে চাকরিচ্যুতির কথাও বলা হয়েছে খসড়ায়।

তথ্য মতে, যৌথ মালিকানাধীন কোচিং সেন্টারগুলো ‘রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি’ (আরজেএসসি) থেকে নিবন্ধন নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। আর একক মালিকানাধীন সেন্টারগুলো সিটি করপোরেশন থেকে নিবন্ধন নেয়। কোচিং সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ করেছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। দুই মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ও বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে সম্প্রতি ছয়টি কোচিং সেন্টারের নিবন্ধন বাতিল করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) বাতিল করে আটটির নিবন্ধন।

এছাড়া শতাধিক কোচিং সেন্টারের নিবন্ধন বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি। এগুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিন, টেক্সটাইল ও ক্যাডেট কলেজে ভর্তির কোচিং সেন্টার আছে। আরো আছে বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির জন্য ও বিভিন্ন ভাষা শেখানোর কোচিং সেন্টার। এমনকি আসন্ন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার তিন দিন আগে থেকে ঢাকাসহ দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ও পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

জানা যায়, দুই দফায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬১৯ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোচিং ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও দুদক মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয়। একটি প্রতিবেদনে দুদক ২৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫২২ শিক্ষকের কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ করে। আরেক প্রতিবেদনে কোচিং বাণিজ্যের মাধ্যমে টাকা উপার্জনের অভিযোগে আটটি প্রতিষ্ঠানের ৯৭ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে দুদক।

২০১২ সালের ২০ জুন কোচিং নিয়ন্ত্রণে ওই নীতিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। একই বছরের ২৫ জুন নীতিমালায় একটি সংশোধনী আনা হয়। এতে সব বিষয়ের জন্য বিদ্যালয়ভিত্তিক কোচিং ফি সর্বোচ্চ এক হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!