পরিচর্চায় ব্যস্ত চাষীরা

লিচু বাগানে মুকুলের সমারোহ

  • চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২০, ১২:৩৬ এএম
লিচু বাগানে মুকুলের সমারোহ

পাবনা : লিচু উৎপাদন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম। এ গ্রামগুলো লিচু গ্রাম হিসেবে মানুষের কাছে ব্যাপক সমাদর পেয়েছে। পাবনার চাটমোহর ইতোমধ্যেই লিচু উৎপাদনে যথেষ্ট পরিচিতি লাভ করেছে। ক্রমান্বয়ে লিচু বাগানের পরিধিও বাড়ছে।

চাটমোহরের লিচু পল্লী হিসেবে খ্যাত রামচন্দ্রপুর, জালেশ্বর, মল্লিকচক, গুনাইগাছা, নতুনপাড়া, পৈলানপুর, জাবরকোলসহ আশেপাশের লিচু গাছগুলো ভরে গেছে মুকুলে মুকুলে। বাগান পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। মৌমাছির গুঞ্জন, মুকুলের সুগন্ধ, নয়নাভিরাম দৃশ্য মোহিত করছে পথচারী ও এলাকাবাসীর মন। কোকিলের কুহুতান, গাছে গাছে নতুন সবুজ পাতা, লাল রঙের শিমুল পলাশ কৃষ্ণচূড়া, ফাগুন মাতাল সমীরণ গায়ে মেখে লিচু চাষীরা করছেন বাগানের পরিচর্যা।

লিচু চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে অধিকাংশ গাছেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লিচুর বাম্পার ফলন হবে। আগামি কয়েক দিনের মধ্যে ফুল থেকে লিচু গুটি আকৃতি ধারণ করবে। তাই গুটি যেন ঝরে না যায় সেদিকে নজর রাখছেন বাগান চাষীরা। গুটি ঝড়া রোধ কল্পে অনেকে বাগানে সেচ দিয়েছেন।

জানা গেছে, প্রায় ২৫ বছর পূর্বে এ এলাকায় বানিজ্যিক ভিত্তিতে লিচু চাষ শুরু হয়। লাভজনক হওয়ায় অনেকে প্রথম দিকে মিশ্র ফল বাগান হিসেবে কলা বাগানে লিচু চাষ শুরু করে। লিচু গাছ বড় হয়ে গেলে অন্যান্য গাছ কটে ফেলা হয়। তারা আরও জানান, লিচু বাগান শুরুর দিকে গাছ ছোট থাকা অবস্থায় কয়েক বছর সাথী ফসলের চাষ করা যায়।

রামচন্দ্রপুর গ্রামের লিচু চাষী শামীম সরদার, লিয়াকত হোসেন পিন্টু ও জালেশ্বর গ্রামের ওয়াজেদ আলী মাষ্টারসহ অনেক লিচু চাষী জানান, গাছে মুকুল আসার পূর্বে কীটপতঙ্গ মাকড়োশা দূরীকরণে স্বল্প পরিমান বালাইনাশক স্প্র করা হয়। প্রতি বছর এ এলাকায় কয়েক কোটি টাকার লিচু উৎপাদন হয়।

এলাকার চাহিদা মেটানোর পর অবশিষ্ট লিচু ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় সরবরাহ হয়। কয়েক ধাপে বিক্রি হয় লিচুর বাগান। গাছে মুকুল আসার পূর্বেই অনেকে ৩ থেকে ৪ মাসের জন্য বাগান বিক্রি দেন লিচু ব্যবসায়ীদের কাছে।

অনেকে লিচু গুটি হবার পর বিক্রি করেন। লিচু পাকার পূর্বেই কয়েকবার পরিবর্তন হয় বাগানের মালিকানার। অনেক বাগান মালিক অধিক লাভের আশায় নিজেরাই পরিচর্যা করেন। অনেক সময় প্রখর খড়ায় লিচুর আকার ছোট হয়ে যায় আবার অনেক সময় বৈশাখী ঝড়ে লণ্ড ভণ্ড হয়ে যায় লিচু বাগান। তখন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন লিচু চাষী ও ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে ৩৪০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে। প্রতি বছর এ এলাকায় লিচু চাষ বাড়ছে ২০ থেকে ২৫ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার মেট্রিকটন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না ঘটলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!