সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু

  • প্রতিনিধি, শরণখোলা (বাগেরহাট) | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০১৯, ০৩:০৪ পিএম
সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু

বাগেরহাট : সুন্দরবনের মধু আহরণে যাত্রা শুরু হয়েছে মৌয়ালদের। পহেলা এপ্রিল থেকেই মধু আহরণের জন্য বনে ছুটতে শুরু করেছেন বন সংলগ্ন এলাকার মৌয়ালরা। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌয়ালরা পাস (বন বিভাগের অনুমতি) নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন। কেউ কেউ মধু আহরণের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বনে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে, পূর্বের তুলনায় সুন্দরবনে মধুর পরিমাণ কমেছে বলে মৌয়ালদের কাছ থেকে জানা যায়।

বনবিভাগ সূত্র জানায়,  চলতি বছর মধু আহরণের খাত থেকে গত বছরের চেয়ে দেড়গুণ বেশি রাজস্ব আয় হবে। প্রতি কুইন্টাল মধু থেকে ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোম থেকে ১ হাজার টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৫ দিনের জন্য জনপ্রতি ৫০ কেজির বেশি মধু আহরণ করতে পারবে না মৌয়ালরা। অনুমতি নেওয়ার প্রথম দিনে তিন শতাধিক মৌয়াল পাস নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছেন।

বন সংলগ্ন খুঁড়িয়াখালী গ্রামের মৌয়াল জামাল ফরাজী, মজিদ ফরাজী, এমাদুল তালুকদার, শাহজাহান আকন এবং শরণখোলা গ্রামের রতন মোল্লা, আসাদুল কবিরাজ, ইউসুফ মাতুব্বর, বাদল হাওলাদার জানায়, বনে এখন আর আগের মতো মধু পাওয়া যায় না। এখন চলছে গরান ও খলসী ফুলের মৌসুম এবং শেষের দিকে আসবে কেওড়ার ফুল। কিন্তু সুন্দরবনের গরান ও খলসী এই দুই জাতের গাছের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। যার ফলে মধুও কম হচ্ছে। তাই তাদের মধু আহরণ করতে বনের গহীনে প্রবেশ করতে হয়। এতে জীবনের ঝুঁকি থাকে। বাঘ, সাপ, কুমির ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর সঙ্গে লড়াই করে তাদের মধু আহরণ করতে হয়।

প্রতিবছর তাদের দুই একজন মৌয়াল ওই সব প্রাণীর আক্রমণে মারা যায়। খুঁড়িয়াখালী গ্রামের সমাজকর্মী মো. রাসেল আহমেদ বলেন, বন সংলগ্ন এলাকার মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে গিয়ে অনেক সময় জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। দুর্গম বনে কেউ অসুস্থ হলে বা হিংস্র প্রাণীর আক্রমণের শিকার হলে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা থাকে না। তার মতে, মধু আহরণ মৌসুমে সুন্দরবনে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা দরকার।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ও শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন জানান, মৌসুম শুরুর ১ম ও ২য়  দিনে শরণখোলা ও বগী স্টেশন থেকে ৩৫টি নৌকার পাস দেওয়া হয়েছে। তিন শতাধিক মৌয়াল দুই সপ্তাহের পাস নিয়ে বনে প্রবেশ করেছে। ওই মৌয়ালরা বনের ২৪ নম্বর কম্পার্টমেন্টের মরাভোলা, তেঁতুলবাড়িয়া, দাসের ভারানি এলাকার বাইরে গিয়ে মধু আহরণ করবে। এবং বনবিভাগের পক্ষ থেকে মৌয়ালদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!