১১টি খাবার আপনাকে করতে পারে আরও বুদ্ধিমান

  • স্বাস্থ্য ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০১৮, ১২:৩৩ পিএম
১১টি খাবার আপনাকে করতে পারে আরও বুদ্ধিমান

ঢাকা : মানুষ তার মস্তিষ্কের কতটা ব্যবহার করতে পারবেন, এটা কীসের উপর নির্ভর করে? এমনটা অনেক কিছুর উপরে নির্ভর করে থাকে। কিন্তু একথা প্রায় প্রমাণিত হয়ে গেছে যে একমাত্র আইনস্টাইন ছাড়া এখনও পর্যন্ত কেউই সেভাবে তার মস্তিষ্কের ১০ শতাংশের বেশি কাজে লাগাতে পারেননি। আর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ হযরত মুহাম্মদ(সা.) দুনিয়ার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানব। কুরআন এবং মুসলিম উম্মাহই কেবল তাঁর শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দেয়নি, দিয়েছেন অমুসলিম মনীষীরাও।

কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন আপনি যদি চান, তাহলে খুব সহজেই আইনস্টাইনকে হারাতে পারেন! কীভাবে এমনটা সম্ভব তাই ভাবছেন নিশ্চয়?

একাধিক গবেষণার পর এ বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই যে বেশ কয়েকটি খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে মস্তিষ্কের অ্যাকটিভ জোন ১০ শতাংশ থেকে ক্রমাগত বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন পাওয়ার বেড়ে যাওয়ার কারণে বুদ্ধির জোরও বাড়তে থাকে। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে।

যে যে খাবারগুলি মস্তিষ্কের পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল-

১. কফি : শুনতে আজব লাগলেও একথার মধ্যে কোনও ভুল নেই যে নিয়মিত দুকাপ করে খাওয়া শুরু করলে শর্ট টার্ম মেমরির উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে অ্যালঝেইমার্স, পার্কিনসন এবং আরও সব মস্তিষ্ক ঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়তে শুরু করে। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হল দিনে কিন্তু ভুলেও ২ কাপের বেশি কফি খাওয়া চলবে না। কারণ বেশি মাত্রায় কফি খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

২. আখরোট : এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সবদিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।

৩. জাম : এই ফলটিতে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্রেন সেল যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ মস্তিষ্কের রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে অ্যালঝাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি প্রতিদিন জাম খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার পাবেন।

৪. অলিভ অয়েল : দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণত রান্না করতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু যদি করা হয়, তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে এই তেলটিতে রয়েছে পলিফনল নামে একটি উপাদান, যা মস্তিষ্কের পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি চলাকালীন বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

৫. ব্রকলি : সালফারাফেন নামক একটি উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে মস্তিষ্কের সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

৬. নারকেল তেল : চুলের পরিচর্যায় কাজে লাগানো হলেও দক্ষিণ ভারতীয় ছাড়া আর কেউ সাধারণত নারকেলে তেলকে রান্নার কাজে লাগান না। কিন্তু যদি লাগাতে পারেন, তাহলে কেল্লাফতে! কারণ নারকেল তেলে উপস্থিত নিউরনের ক্ষমতা বাড়য়ে তোলে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকারক উপাদান যাতে মস্তিষ্কের ভিতর কোনও ক্ষতি করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান আরও দ্রুত গতিতে হতে থাকে। ফলে যে কোনও কাজ নিমেষে সম্পন্ন করতে কোনও কষ্টই করতে হয় না।

৭. পালং শাক : আগা-গোড়াই বাঙালিদের এই শাকটির প্রতি একটু আলাদা রকমের একটা দুর্বলতা রয়েছে। যে কারণে দেখবেন বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দেওয়ার প্রয়োজন পরে এমন কাজে বাঙালিরা সবসমই এগিয়ে। আর কেন থাকবে নাই বা বলুন! পালং শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিক ভাবেই মস্তিষ্কের পাওয়ার চোখ পড়ার মতো বৃদ্ধি পায়।

৮. ডিম : এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারি কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা মস্তিষ্কের সেলের যাতে কোনও ভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে নানাবিধ মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।

৯. মাছ : বেশি তেল রয়েছে এমন মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুন কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি মস্তিষ্কের সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আঁধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।

১০. হলুদ : একেবারেই ঠিক শুনেছেন! এই প্রকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আসলে হলুদে উপস্থিত বেশি কিছু কার্যকরি উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ভিতরে প্রদাহ কমায়, তেমনি অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রায় ৩০০০ বছর পুরানো একটি আয়ুর্বেদিক পুঁথির খোঁজ মিলেছে, তাতেও মস্তিষ্কের পাওয়ার বাড়াতে হলুদ কীভাবে কাজে আসে, সে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

১১. শতমূলী : এই প্রাকৃতিক উপাদনটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং এমন কিছু উপাদান, যা শরীরে মস্তিষ্কের উপকারে লাগে এমন ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ফলেট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদানও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সোনালীনিউজ/আরজে

Link copied!