যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা: বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম
যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা: বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক শক্তিপ্রদর্শন ও পাল্টাপাল্টি অবস্থান ঘিরে ফের বাড়ছে পরমাণু সংঘাতের আশঙ্কা। সম্প্রতি রাশিয়ার জলসীমার কাছাকাছি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়।

বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ঠাণ্ডা যুদ্ধ-পরবর্তী যুগের অন্যতম বড় কৌশলগত উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষত, পরমাণু সক্ষমতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ‘নীরব প্রতিযোগিতা’ পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের হুঁশিয়ারিমূলক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নয়, বরং প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত চায় না, তবে হুমকির মুখে নীরব থাকা যায় না।”

বিশ্লেষকদের ধারণা, এই সিদ্ধান্ত শুধু রাশিয়ার জন্য বার্তা নয়, বরং গোটা বিশ্বের জন্য স্পষ্ট একটি ইঙ্গিত—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো তার পরমাণু শক্তি ও সামরিক প্রভাব বিস্তারে আগ্রহী এবং সক্ষম।

মার্কিন নৌবাহিনীর হাতে রয়েছে ভয়ংকর ও আধুনিক ‘বুমার’ সাবমেরিন—ওহাইও-ক্লাস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ। প্রতিটি সাবমেরিন পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং শত্রুর অজান্তে মিসাইল নিক্ষেপে পারদর্শী। বর্তমানে অন্তত ১৪টি সক্রিয় বুমার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে, যেগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মেরামত ছাড়াই সাগরতলে টহল দিতে সক্ষম।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে তিন ধরনের ‘ফাস্ট অ্যাটাক’ সাবমেরিন: ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস। এই ডুবোজাহাজগুলো শত্রু সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক হামলা চালাতে পারে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার সাবমেরিন বহর সংখ্যায় ও বৈচিত্র্যে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ। দেশটির রয়েছে প্রায় ৬৪টি সাবমেরিন, যার মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী। বোরেই-ক্লাস ও ডেল্টা আইভি-ক্লাস সাবমেরিন রাশিয়ার পরমাণু প্রতিরোধ ব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এছাড়া ইয়াসেন-ক্লাস সাবমেরিনগুলো আকারে ছোট হলেও অত্যন্ত শক্তিশালী। এগুলোর রয়েছে দূরপাল্লার হামলা চালানোর সক্ষমতা এবং সীমিত সংখ্যক নাবিক দিয়ে পরিচালনা সম্ভব হওয়ায় এগুলো দ্রুত মোতায়েনযোগ্য।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে এই নতুন উত্তেজনা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। সামান্য অসতর্কতা থেকেই এ পরিস্থিতি গড়াতে পারে বড় ধরনের সংঘাতে।

ওএফ

Link copied!