বিমানে ল্যাপটপ ও ক্যামেরা বহনে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০১৭, ০৯:৫৮ পিএম
বিমানে ল্যাপটপ ও ক্যামেরা বহনে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রগামী যাত্রীরা বিমানের ভিতরে হাতে বহনযোগ্য মোবাইল ফোন ছাড়া অন্য কোন ইলেকট্রনিক্স পণ্য বহনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ল্যাপটপ, ট্যাব, ক্যামেরা ও মোবাইল ফোনের চেয়ে বড় কোনো ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিমানের ভিতরে বহন করতে পারবেন না যাত্রীরা। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ৮টি দেশ থেকে যাওয়া বিমানের ক্ষেত্রে এই আদেশ কার্যকর করবে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বাংলাদেশি যাত্রীরাও সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে।

নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এমন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রে লুকানো বোমা ব্যবহার করে উড়োজাহাজে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করছে এমন তথ্য পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। 

এই ৮টি দেশের ১০টি বিমানবন্দর ব্যবহারকারী বিমান সংস্থাগুলোকে এই আদেশ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে বিশ্বের ৫৬টি রুট ব্যবহার যে বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্র যায়, তাদের সাবধান হতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের যাত্রীরা ওই বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র যায়। এতে এই হয়রানির মুখে পড়তে হবে বাংলাদেশিদের।

২১ মার্চ জারি করা ওই আদেশে বলা হয়েছে, যাত্রীরা তাদের চেকড লাগেজ, যেটি আলাদাভাবে বিমানে যায়, তাতে সকল ইলেকট্রনিক্স পণ্য বহন করতে পারবেন। তবে, বিমানের ভিতরে হাত ব্যাগে শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। স্মার্ট ফোনের আকারের চেয় বড় কোনো ট্যাব বা কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস পর্যন্ত কোনো যাত্রী বহন করতে পারবেন না। 

এর ফলে যাত্রীদের মোবাইল ফোন ছাড়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ‘চেকড ব্যাগেজ’ হিসেবে দিতে হবে। সেগুলো তিনি যাত্রার সময় নিজের হাতে রাখতে পারবেন না। মূলত মুসলিম ওই দেশগুলোর দশটি বিমানবন্দরকে কেন্দ্রে করে ফ্লাইট পরিচালনা করে এমন নয়টি বিমান পরিবহন সংস্থার ওপর সরাসরি এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে। 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ২১ মার্চ গ্রিনিচ মিন টাইম সকাল ৭টা থেকে ৯৬ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোকে। তবে অনুমোদিত চিকিৎসা যন্ত্রপাতি এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় যেসব বিমানবন্দর:  
জর্ডানের আম্মানের কুইন আলিয়া ইন্টারন্যাশনাল, মিশরের কায়রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত আতাতুর্ক বিমানবন্দর, সৌদি আরবের কিং আবদুল আজিজ, কিং খালিদ ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, কুয়েত ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, মরক্কোর মোহাম্মেদ ভি ইন্টারন্যাশনাল, কাতারের হামাদ ইন্টারন্যাশনাল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ও আবু ধাবি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ইত্যাদি। এই বিমানবন্দরগুলো ব্যবহারকারী যাত্রীদের বেলায় যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আদেশ কার্যকর হবে।

নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার সময় যে প্রতিবেদনের উল্লেখ করা হয়েছিল, তাতে  উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সোমালিয়ার রাজধানীর মগাদিসু থেকে উড্ডয়নের অল্প সময়ের মধ্যে একটি বিমানে বিস্ফোরণ হয়েছিল। দুবাইভিত্তিক এয়ারলাইনস দালাওয়ের উড়োজাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। বিস্ফোরণের পর ওই উড়োজাহাজ থেকে এক যাত্রীর মৃতদেহ বের করা হয়, যিনি একটি ল্যাপটপ বোমা বহন করছিল। পাইলট কোনোভাবে বিমানটিকে অবতরণ করাতে পেরেছিলেন; ওই বিস্ফোরণে একমাত্র নিহত ব্যক্তি ছিলেন ওই বোমাবাজ।

ফের ওই ধরনের হামলার সম্ভাবনা দেখছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা। সেজন্য সতর্কতা অবলম্বন করতে যাচ্ছে তারা। 

এ বিষয়ে বিমান চলাচল নিয়ে বিশেষায়িত একটি পত্রিকার সম্পাদক এন্ড্রুই থমাস বলেছেন, বিমানপথকেই আল কায়েদার মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। ইলেকট্রনিক্স পণ্যে বোমা পরিবহন নতুন নয়। যাত্রীর চেকড লাগেজে বোমা বহন করে ১৯৮৮ সালের ডিসেম্বরে প্যান এম ১০৩ নামে একটি বিমান ধ্বংস করা হয়েছিল। উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিমানে যাত্রার সময়ে আমরা যাত্রীদের মোবাইল ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে পারবো কি-না।

সোনালীনিউজ/আতা

Link copied!