যৌনতায় আগ্রহ হারাচ্ছেন কেন পশ্চিমা নারীরা?

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০১৭, ১০:৫২ এএম
যৌনতায় আগ্রহ হারাচ্ছেন কেন পশ্চিমা নারীরা?

ঢাকা: বিশ্বের অসংখ্য নারীই সহজ কিছু রোগে ভুগছেন, তবে মানুসিক কারণে সেটা জটিলতা দেখা দেয়। তেমনি এক রোগের নাম ‘অযৌনতা, অর্থাৎ এ সব রোগীরা সঙ্গীর সঙ্গে যৌনমিলনে কোনো আকর্ষণ খুঁজে পায় না। বিশ্বে ১ থেকে ৩ শতাংশ মানুষই এর রোগে ভুগছেন।

তেমনি একজন স্টেসি, দীর্ঘ দিন তিনি এই সমস্যায় ভুগেছেন। তার অবস্থা এমন ছিল যে কোনো পুরুষ এমনকি স্বামীর সঙ্গেও রাতে এক সঙ্গে থাকতে চাইতেন না। সম্প্রতি তিনি তার গৃহ-ডাক্তারকে তার সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। 

আমি শারীরীক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম, এটা ছিল দীর্ঘ কয়েক বছর। কোনো পুরুষের সঙ্গেই যৌনমিলনে কোনো আগ্রহ বা আকর্ষণ ছিল না।

বন্ধবীরা যখন তাদের বয়ফ্রেন্ড (ছেলে বন্ধু) অথবা কোনো তারকার সঙ্গে যৌনমিলনের অভিজ্ঞতার কথা বলতো, তখন আমি শুধু শুনতাম তেমন আগ্রহ দেখাতাম না। ভাবতাম এটা কারো একান্তই যৌনধারণা।

যখন আমার বয়স বিশের কোঠায়, তখন আমি লক্ষ করলাম এটা আমার এক ধরণের রোগ। তবুও কাউকে লোকলজ্জায় বলতাম না। কারণ, ‘তারা তো জানে আমি সুস্থ, অনেক শক্তিশালী।’

‘অযৌনতা’য় বেশ বর্ণালী আছে, যদিও আমি পুরুষের প্রতি যৌনতায় আকৃষ্ট হতে পারতাম না, তবুও আমি খুব রোমান্টিক ছিলাম।

আমার বয়স যখন ১৯। আমার বয়ফ্রেন্ড, বর্তমান তিনি আমার স্বামী। তাকে আমি আমার সমস্যার কথা জানায়নি। বরং এসব ব্যাপারে তার সঙ্গে রুক্ষ আচারণ করতাম। আর তাতে সে মানিয়ে নিয়েছিলও।

ভুক্তভোগী স্টেসি

এক সময় আমার হয়েছিল, ‘আমি তাকে ভালোবাসি এবং সে আমাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিল আমিও রাজি হলাম। কারণ তার সঙ্গে খবু ভালো সময় কাটতো। তাহলে কেন তার সঙ্গে যৌনমিলন করতে পারবো না? এটা এক ধরণের পাগলামো।’

এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমি ও আমার স্বামী ভ্রমনে গিয়েছিলাম। তবুও তাকে কাছে আসতে দেইনি। তবে সে বুঝেছিল, আমাকে সহায়তা করেছে বেশ। বলেছে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি, যতদিন লাগে লাগুক আমি অপেক্ষা করবো, যখন তুমি সুখবোধ করো তখন হবে।’

সে আমাকে খুবই সহায়তা করেছে এবং কখনো আমি বিরোক্ত হোই তেমনি কিছু করেনি। আমাকে আনন্দে রাখার চেষ্টা করেছে।

পরিবার ও সমাজ আমাকে যখন পরামর্শ দিল সন্তান গ্রহণের। আমি ভাবলাম ঠিকইতো আমার বান্ধবীরাও স্বামীকে সময় দিয়ে তার সঙ্গে যৌনমিলনের মাধ্যমে সন্তান গ্রহণ করেছে। আমি তখন বলেছিলাম, ‘ওহ সৃষ্টিকর্তা, আমার স্বামীর সঙ্গে ঘুমানো দরকার, তার সঙ্গে অবিচার করছি এবং অবশ্যই আমার সন্তান দরকার।’

আমি দুঃস্বপ্ন দেখা শুরু করলাম। আমিতো আমার স্বামীকে সময় দিচ্ছিনা। তাহলে তো ঠিক অন্য কাউকে খুঁজে নেবে... ইত্যাদি, ইত্যাদি...। ভাবতাম তাহলে কী সে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে? আমি একটি সিদ্ধান্তে উপনিত হলাম- শুধু আমার কারণেই সে এতটা কষ্ট পাচ্ছে।

আমার বয়স যখন ২৭ কিংবা ২৮ তখন ভাবলাম, ‘আমার সাথে কী ঘটছে, আমি কী তা জানি? আমাকে অবশ্যই এর কারণ খুঁজতে হবে, আবশ্যই সমাধানে আসতে হবে।’

আমি রাত-দিন এক করে ইন্টারনেট ঘটাঘাটি করলাম। যৌনমিলনের ডাক্তারি উপায় ও নিয়ম সম্পর্কে জনলাম। পরে আমি খুঁজে পেলাম যে আমার ব্রেন টিউমার হয়েছে। অবশ্য সেই ধারণাটা আমার ভুল ছিল, আসলে হরমন জনিত কারণে এরকম হতো।

আমি চিন্তা করতাম, ‘ওহ, আমি কি ব্রেন টিউমারে মারা যাবো।’

অনেক উদ্বিগ্ন হয়ে আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে বললাম, ‘ডাক্তার আমি মারা যাচ্ছি?’

তিনি বলেছিলেন, ‘শান্ত হও, তেমন কিছু হয়নি উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

তাহলে কী হয়েছে?

তারপর তিনি বুঝিয়ে বললেন, আমি যেসব ওয়েবসাইট থেকে জেনেছি। আমার জানা সম্পূর্ন ছিল না। যার কারণে এই ভুল তথ্য পেয়েছি।

তিনি বললেন, আমি কখনো অযৌন ছিলাম না। এরপর কিছু সাধারণ পরামর্শে আমি স্বাভাবিক হলাম। আমি আগের চেয়ে আরাম অনুভব করালাম। তারপর আমি আমার স্বামীকে সব খুলে বললাম। সে বলেছিল, ‘এ পর্যায়ে এসে এসব আলোচনা থাক, আমরা জীবন উপভোগ করি।’ সূত্র: বিবিসি

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Link copied!