ছবি: প্রতীকী
ঢাকা: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশে চার হাজার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই, নিরস্ত্র) নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। নির্বাচনের আগে পুলিশ বাহিনীর জনবল ও সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে বিধি সংশোধন করতে হবে। এর আগে কনস্টেবল ও এসআই পদে সরাসরি নিয়োগ হলেও এএসআই পদে এবারই প্রথম সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-৩ শাখা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোর আওতায় চার হাজার এএসআই (নিরস্ত্র) গ্রেড-১৪ পদ রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজন করা হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হতে পারে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ও এ নিয়োগে সম্মতি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পদগুলো সৃজন করা হয়েছে। তবে অর্থ বিভাগ কিছু শর্ত দিয়েছে—এর মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ কনস্টেবল পদ বিলুপ্তির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অনুমোদন নেওয়া।
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জানান, চার হাজার এএসআইয়ের মধ্যে দুই হাজার জন সরাসরি নিয়োগ পাবেন, বাকি দুই হাজার কনস্টেবলদের পদোন্নতির মাধ্যমে পদায়ন করা হবে।
গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত এক চিঠিতে পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে দুই হাজার শূন্যপদ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ ঢাকা জেলায় ১৬৭টি, এরপর চট্টগ্রামে ১০৬টি।
আইজিপি বাহারুল আলম বলেন, “৫০ শতাংশ নিয়োগ হবে সরাসরি, আর ৫০ শতাংশ পদোন্নতির মাধ্যমে। বিধিতে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন ছিল, যা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করছে। এতে নিয়োগের পথ আরও সুগম হয়েছে।”
নির্বাচনকে সামনে রেখে এই নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অবশ্যই, প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ফোর্সে নিয়োগের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন। এটি তারই অংশ।”
পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ বলেন, “এএসআই পদে এবারই প্রথম সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হবে। এসআই নিয়োগের মতোই একই পদ্ধতিতে এএসআই নিয়োগ হবে। প্রার্থীদের শারীরিক মাপ, সহনশীলতা, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা, মনস্তত্ত্ব ও কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিয়োগ পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমে নতুন গতি আনবে এবং নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা আরও সুসংগঠিত করতে ভূমিকা রাখবে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :