ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস আজ

  • ঝিনাইদহ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০১৬, ০৬:৪১ পিএম
ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস আজ

আজ ৬ নভেম্বর ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝিনাইদহ। আকাশে ওড়ে লাল সবুজের স্বাধীন পতাকা।

ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার মকবুল হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশে এগিয়ে আসতে থাকলে বিষয়খালী ব্রিজের এপার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বাধা দেন।

প্রায় তিন ঘণ্টা যুদ্ধের পর তারা পিছু হঠে যায়। ১৬ এপ্রিল হানাদার বাহিনী আবারও বিষয়খালী বেগবতী নদীর তীরে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বাধার মুখে পড়ে। এখানে প্রায় ৬ ঘণ্টা তুমুল যুদ্ধ হয়।

এই যুদ্ধে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ব্রিজের পাশেই তাদের গণকবর দেয়া হয়। এ থেকেই জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ। বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ হয় মুক্তিযোদ্ধাদের। উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের মধ্যে ছিল- বিষয়খালী যুদ্ধ, গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ, শৈলকুপা থানা আক্রমণ, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ।

ঝিনাইদহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, ১ থেকে ১৬ এপ্রিল বিষয়খালী যুদ্ধে ৩৫ জন, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধে ৪১ জন, ২৬ নভেম্বর কামান্না যুদ্ধে ২৭ জনসহ ঝিনাইদহ জেলায় ২৭৬ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

এদের মধ্যে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে দুই জন। তাঁরা হলেন- বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অনেককে বিভিন্ন স্থানে গণকবর দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের নাম ঠিকানা আজও মেলেনি। ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ জেলা শহর শত্রু মুক্ত হয়। এর আগে ৩ ডিসেম্বর মহেশপুর, ৪ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুর, ৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ এবং সর্বশেষ ১১ ডিসেম্বর শৈলকূপা উপজেলা শত্রু মুক্ত হয়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ঝিনাইদহ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর জেলা কমান্ডার আমির হোসেন মালিতা জানান, মিত্র বাহিনী ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারে খবর নিতে আসেন। মিত্র বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল বাহেলে ও লে. কর্নেল পিকে দাস গুপ্ত।

ঝিনাইদহের ইউনিট কমান্ডার হিসেবে তিনিসহ ইউনিয়ন কমান্ডার রজব আলী, বাকুয়া গ্রামের মরহুম মনিরুল ইসলাম, নারিকেল বাড়িয়ার বুলু মিয়া, গাবলা গ্রামের মকছেদ আলীসহ অনেকে মিত্র বাহিনীকে স্বাগত জানায়।

৫ ডিসেম্বর বিকালে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী ঝিনাইদহ শহরের চারি পাশে অবস্থান নেন।

গোলাবর্ষণ করতে থাকে পাক সেনা অবস্থানের উপর। ৬ ডিসেম্বর সকালে পাকসেনারা ঘাঁটি ছেড়ে মাগুরার দিকে পালিয়ে যায়। অনেক পাক সেনা বন্দী হয়। ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত হয়। হাজার হাজার মানুষ ঘর থেকে রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে।

সোনালীনউিজ/ঢাকা/এইচএআর

Link copied!