ঢাকা: হাতের কাঁপুনি অনেক কারণে হতে পারে। কখনো এটি হতে পারে কোনো স্নায়ুবিক (নিউরোলজিক্যাল) রোগ, আবার কখনো কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেও। তবে এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ যেটা অনেকেই উপেক্ষা করেন, সেটি হলো ভিটামিনের ঘাটতি।
বিশেষ করে ভিটামিন বি-১২, বি-৬ ও বি-১ (থায়ামিন) আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সঠিক কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
এই ভিটামিনগুলোর অভাবে স্নায়ু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার ফলে হাত কাঁপা বা কম্পনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ভিটামিন বি-১২ এর অভাব
হাত কাঁপার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর একটি হলো এই ভিটামিনের অভাব। এটি স্নায়ু রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর অভাবে দেখা দিতে পারে : ঝিনঝিন অনুভব, অসাড়তা, ভারসাম্য হারানো, হাত কাঁপুনি।
বিশেষ করে নিরামিষভোজীরা, হজমজনিত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তি এবং নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ গ্রহণকারীরা এ ভিটামিনের ঘাটতির ঝুঁকিতে থাকেন।
বি-১২ এর উৎস : মাংস, ডিম, মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। নিরামিষভোজীদের ক্ষেত্রে ফর্টিফাইড খাবার বা সাপ্লিমেন্ট হতে পারে বিকল্প।
ভিটামিন বি-৬ এর অভাব
বি-৬ এর ঘাটতিও হাত কাঁপার কারণ হতে পারে।
শুধু কাঁপুনিই নয়, এর অভাবে দেখা দিতে পারে : উত্তেজনা বা রাগ, বিষণ্ণতা, মানসিক বিভ্রান্তি।
তবে মনে রাখা জরুরি, বি-৬ এর অতিরিক্ত গ্রহণ (ওভারডোজ) স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে।
বি-৬ এর উৎস : কলা, মুরগির মাংস, মাছ, আলু ও ভিটামিনযুক্ত সিরিয়াল।
ভিটামিন বি-১ (থায়ামিন)-এর অভাব
এটির ঘাটতি সাধারণত দেখা যায় : যারা দীর্ঘদিন মদ্যপান করেন, যাদের দেহে পুষ্টি শোষণের সমস্যা (ম্যাল-অ্যাবসর্পশন) রয়েছে।
লক্ষণ : বিভ্রান্তি, শরীরের সমন্বয়হীনতা, হাত কাঁপুনি
বি-১ এর উৎস : অখণ্ড শস্য, ডাল, বাদাম।
কী করবেন?
যদি আপনি নিয়মিত হাত কাঁপার সমস্যায় ভোগেন, তাহলে বিষয়টি হালকাভাবে নেবেন না। রক্ত পরীক্ষা করে ভিটামিনের মাত্রা জেনে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে সঠিক খাদ্য গ্রহণ বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ করলে উপশম মিলতে পারে। সব সময় হাত কাঁপার কারণ কোনো গুরুতর অসুস্থতা না-ও হতে পারে। অনেক সময় ছোট একটি ভিটামিন ঘাটতি থেকেও এমন হতে পারে। তাই সচেতন থাকুন, সঠিক পুষ্টি নিন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ইউআর
আপনার মতামত লিখুন :