ছবি: প্রতীকী
১৯০০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হতো নারীদের নামে। যেমন-ক্যাটরিনা, নার্গিস, স্যান্ডি, রেশমি, রিটা, বিজলি, অগ্নি, নিশা, গিরি, হেলেন, চপলা, অক্ষি, তিতলি, নিলুফার।
তখনকার আবহাওয়াবিদরা মনে করতেন, নারীর নাম সহজ ও স্মরণযোগ্য, তাই দ্রুত প্রচার ও সতর্কতা পৌঁছে দেওয়া যায়। বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড়ের নাম হতো ‘এ’ দিয়ে, দ্বিতীয়টির ‘বি’ দিয়ে-এভাবে ক্রমানুসারে নামকরণ চলত।
পরে সমালোচনার মুখে দক্ষিণ গোলার্ধে পুরুষের নামেও ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ান আবহাওয়াবিদরা তখন অপছন্দের রাজনৈতিক নেতাদের নামেই ঝড়ের নাম দিতেন।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, যে মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়, সেই অঞ্চলের দেশগুলো নাম প্রস্তাব করে। বর্তমানে পৃথিবীতে মোট ১১টি সংস্থা ঝড়ের নামকরণ করে। ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করে প্যানেল অন ট্রপিক্যাল সাইক্লোনস , যার তত্ত্বাবধানে কাজ করে ভারতের আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র ।
প্রথমে ৮ দেশ মিলে ৬৪টি নামের তালিকা করেছিল। এখন ১৩টি দেশ ১৩টি করে নাম দেয়-মোট ১৬৯টি নাম। নামগুলো দেশগুলোর ইংরেজি বর্ণানুক্রম অনুযায়ী সাজানো থাকে।
যখন কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, তালিকার ক্রমানুসারে সংশ্লিষ্ট দেশের দেওয়া নাম বেছে নেওয়া হয়। যেমন-থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম ‘আম্ফান’-এর পর বাংলাদেশের দেওয়া নাম ছিল ‘নিসর্গ’। এবার সেই ধারাবাহিকতায় আসছে ‘মন্থা’, নামটি দিয়েছে ভারত।
সূত্র বলছে, ভারত এখন পর্যন্ত ৮টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়েছে, এর মধ্যে মাত্র একটি-‘বিজলি’-মেয়েদের নাম। বিপরীতে পাকিস্তানের দেওয়া ৮টির মধ্যে ৭টিই নারীর নাম, যেমন-তিতলি, নার্গিস, লায়লা। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৭টি নাম দিয়েছে, যার মধ্যে তিনটি নারীর-চমলা, হেলেন ও নিশা।
ঘূর্ণিঝড়ের বৈজ্ঞানিক নাম সাধারণ মানুষের বোঝার পক্ষে কঠিন। তাই সহজ ও ছোট নাম বেছে নেওয়া হয়, যাতে গণমাধ্যম ও কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রচার করতে পারে এবং মানুষ সহজেই সতর্কতা বুঝতে পারে।
যখন বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬৩ কিলোমিটার ছোঁয়, তখন তাকে বলা হয় ট্রপিক্যাল স্টর্ম। আর যখন গতি ঘণ্টায় ১১৯ কিলোমিটারের বেশি হয়, তখন সেটি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, বোল্ডস্কাই, ইন্ডিয়া টুডে
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :