সকালে ঘুম থেকে ওঠার কৌশল

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০১৬, ০৪:৩১ পিএম
সকালে ঘুম থেকে ওঠার কৌশল

সোনালীনিউজ ডেস্ক

জরিপে দেখা গেছে, ভোরে ঘুম থেকে ওঠা ব্যক্তিরা বেলা করে ঘুম থেকে ওঠা ব্যক্তিদের চেয়ে বেশি সফল। তবে লাগামছাড়া ঘুমটাকে কিছুতেই বশ মানানো যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার কৌশল উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে পরামর্শ দেন, আমেরিকান একাডেমি অফ স্লিপ মেডিসিন’য়ের মুখপাত্র এবং ভার্জিনিয়ার মার্থা জেফারসন হসপিটাল স্লিপ মেডিসিন সেন্টার’য়ের মেডিকল ডিরেক্টর ডা. ডব্লিউ ক্রিস্টোফার উইন্টার।

তিনি বলেন, “আপনি ভোরে জাগবেন না বেলা করে জাগবেন তার নির্দেশককে আমাদের পরিভাষায় বলে, ‘ক্রোনোটাইপ’ আর ক্রোনোটাইপ নির্ধারিত হয় জিনগতভাবে। একটি পরিবারের সবাই একই ক্রোনোটাইপের অধিকারী হতে পারে। তবে একে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যায়।”

উইন্টার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ক্রোনোটাইপ পরিবর্তন করার জন্য দুই সপ্তাহ লাগে। তবে পরিবর্তিত রুটিন খুব কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। নাহলে ঘুমের অভ্যাস আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। দেহঘড়িকে নতুন করে বিন্যস্ত করার জন্য উইন্টার ছয়টি পরামর্শ দেন।

সময় মতো শুতে যাওয়া এবং ওঠা: আমাদের দেহ নির্ধারিত রুটিনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে চায়। উইন্টার পরামর্শ দেন, প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠা, ব্যায়াম ও খাওয়ার সময় একই রাখতে হবে। তবে শোবার সময় নিয়ে কোনো ধরা বাঁধা নেই।

কারণ উইন্টারের মতে, “দেহ আপনা আপনিই ক্লান্ত হয়ে ঘুমানোর সময় বেছে নেবে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, জেগে থাকার সময় ঘুমিয়ে না পড়া।”

তিনি বলেন, “ঝামেলা বাঁধে তখনই যখন ছুটির দিনে পুরানো অভ্যাস বশে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন। কেননা, এর মাধ্যমে দেহকে এই বার্তা দেওয়া হয়, যেন সপ্তাহের বাকি দিনগুলোয় ঘুম ভাঙার রুটিনটি আসলে অস্থায়ী এবং ক্রোনোটাইপ-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রুটিনে ফিরে যাওয়াই শ্রেয়। সুতরাং ছুটির দিনেও একই সময়ে জেগে উঠুন, এমন কি আগের রাতে শুতে দেরি হলেও।

স্মার্ট অ্যালার্ম: প্রচলিত মোবাইলের অ্যালার্ম বা অন্যান্য অ্যালার্ম ঘড়ির ভেতরে ‘স্নুজ’ অপশনটি থাকে, যা চালু থাকলে নির্ধারিত সময়ের অ্যালার্ম থামিয়ে দেওয়ার কিছুক্ষণ পর আবার বেজে ওঠে। এই অবসরে যেন আরেকটু ঘুমিয়ে নেওয়া যায়।

উইন্টারের মতে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘুম থেকে জেগে ওঠার জন্য বরং ‘স্মার্ট অ্যালার্ম অ্যাপ’ বা ‘ম্যাথ অ্যালার্ম’ ব্যবহার করা উচিত। এ ধরনের অ্যাপ নির্ধারিত সময়ে বেজে ওঠা শুরু করলে থামানোর শর্ত হিসেবে একটি গাণিতিক সমস্যা উপস্থাপন করবে, যা সমাধান না করে অ্যালার্ম থামানো যাবে না।

উইন্টার বলেন, “একটি গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা আপনাকে একটি তথ্যভিত্তিক বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যথেষ্ট সজাগ করে তুলবে।”

আলো আসতে দিন: হোক প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম- আলোর উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি, কেননা আলোর উপস্থিতি মস্তিষ্কের কাছে বার্তা পৌঁছায় যে, সকাল হয়েছে এবং মেলাটোনিন’য়ের মতো হরমোন নিঃসরণ এখন থামানো দরকার। মেলাটোনিন হরমোন ঘুমের রুটিন নিয়ন্ত্রণ করে।

ধরুন, আপনার ঘুম তাড়িয়ে জেগে ওঠা দরকার অথচ ভোর পাঁচটা বাজে, আলো এখনও ফোটে নি। তখন ঘরের ভেতর উজ্জ্বল বাতি জ¦ালিয়ে দিয়ে মস্তিষ্ককে ফাঁকি দিতে পারেন।

ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম: শরীরকে জাগিয়ে তোলার সবচেয়ে ভালো উপায় ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করা। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপালেশিয়ান স্টেট ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা দেখেছেন, সকালের শরীরচর্চা রক্তচাপ কমায়, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমায় এবং রাতের ঘুম ভালো করতে সাহায্য করে।

উইন্টার বলেন, “উজ্জ্বল আলোতে ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। সকালে করার জন্য সাইকেল চালানো বা জগিং হতে পারে চমৎকার ব্যায়াম।”
আমিষ সমৃদ্ধ খাবার: জেগে থাকতে সাহায্য করে, বিপরীতে শর্করা ঘুমের উদ্রেক করে।
উইন্টার বলেন, “আমিষ ডোপামিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা আপনাকে সারাদিনের জন্য চাঙ্গা করে তুলবে।”
ঘুমের জন্য তাড়াহুড়ো নয়: উইন্টার বলেন, “প্রথম কয়েকদিন আগে আগে ঘুমানো কঠিন মনে হতে পারে। এমন কি ঘুমানোর জন্য তাড়াহুড়া করেও বসতে পারেন।”
তবে এটি ঠিক নয়। আগে ঘুমাতে যাওয়ার জন্য ঘুম ঘুম ভাব ধরে রাখার প্রয়োজন নেই।

সোনালীনিউজ/আকন

Link copied!