বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা

শেখ মুজিবুর রহমান

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৩, ২০১৬, ১০:৪৭ এএম
শেখ মুজিবুর রহমান

সাফায়াত চৌধুরী

হাজার বছর অপেক্ষার পরে তুমি এলে
পলি মাটির এই দেশে
কতো রক্ত স্রোত বয়ে গেলো
কতো আর্তনাদ, কতো বেদনা নিয়ে অস্তিমিত হলো স্বাধীনতা-সূর্য 
নেমো এলো ঘোর অন্ধোকার।
চারদিকে যখন মীর জাফর আর 
জগৎশেঠদের অশুরোল্লাসে ফাঁটে জলসাঘর 
বাংলার স্বাধীনতা নাচে ক্লাইভের লাল-নীল পেয়ালায়। 
পরাধীনতার বেদনায় তখন
নবাবের বুকফাটা চিৎকার।

এরপর ইতিহাস, ইতিহাস গভীর অন্ধকারের
রক্তাক্ত মাঠের বুকে শতো ছিন্ন দেহের।
ধর্ষিত নারীর আর্তচিৎকারের অথবা
গর্ভবতীর পেটে লাথি, গর্ভপাত কিংবা 
সবচেয়ে সহজ মানুষটির বুকে
বেয়োনেটে খোঁচায়- বাংলার বুকজমিন।
যখন হাহাকার জাগায় অগুনিত নবাবের বুকে
অত্যাচারিত বাংলায় যখন মুক্তির অপেক্ষা,
অপেক্ষা শুধু একটি কন্ঠস্বরের, 
ঠিক তখনি তুমি এলে।
কতো সহজে সোজাসাপটা জানিয়ে দিলে ছাপকথা...
হাজার বছর পরে এই বাংলায় তুমি এলে

তাই বুঝি ম্রিয়মান চোখ, ম্লান মুখ, বাকরুদ্ধ জনতা 
অধীর আগ্রহে স্থির হয়ে বসে
মুগ্ধ চোখে তাকায়, ভাবে এবং তোমার কন্ঠে কন্ঠ মেলায়
তখন গভীর রাত- ঘোর অন্ধকার হায়না, নেকরে, 
ফেউ-রাতভর হৃদপিন্ড ছিঁড়ে বেরোয়।
তখন বেরিয়ে এলে তুমি, ফেলে সজ্জার সুখ প্রিয়সীর মুখ।

মধুমতির স্বচ্ছ জল ছুঁয়ে
চির সবুজের বুকে ঢেউ তুলে
দৃঢ়কন্ঠে জানালে তোমার স্বপ্নের কথা।
আর সেই সাথে জেগে উঠলো
তোমার স্বপ্নের ঢেউ বাংলার বুকজুড়ে-
সাতকোটি মানুষ হয়ে উঠলো পদ্মা, মেঘনা, যমুনা-।

তোমার স্বচ্ছ চোখ আরো দূরে প্রসারিত হয়
দিগন্তের শেষ রেখায়- এক নতুন বন্দরের দিকে।
পালছেড়া হাওয়া আসে নিয়ে হিংস্রতা 
সাম্রাজ্যবাদ চোখ রাঙায়, তবুও তারা সব
সব ব্যর্থ হয়, তুমি ছিলে বলে।

তোমার অবাধ্য সাহস অবিচলভাবে এগিয়ে নেয়
সোনালী বন্দরের দিকে।
শকুনের দল মাথার উপরে ঘোরে-
দানবেরা প্রচন্ড হিংস্রতায় যখন ছুটে আসে
তখন তুমিই বুক পেতে দিলে।
তারপর দীর্ঘ নয় মাস রক্তের স্রোতে ভেসে
আসে আমাদের হৃদপিন্ডের জাহাজ,
সবুজ বন্দরে হয় তার নোঙর।
লাল-সবুজের পতাকা মাথা উচু করে দাঁড়ায়
পৃথিবীর বুকে।
এভাবেই, স্বাধীনতা শব্দটি আবার ফিরে এলো
তোমার হাত ধরে, 
যা আমাদের চেতনায় আজও বহমান
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী
স্বাধীনতা-সূর্য হাতে শেখ মুজিবুর রহমান।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Link copied!