জঙ্গিবাদ ও নারী-শিশু নির্যাতন রুখবে জনগণ

  • সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০১৬, ১০:৫১ পিএম
জঙ্গিবাদ ও নারী-শিশু নির্যাতন রুখবে জনগণ

ঢাকা: ‘জঙ্গিবাদ নারী ও শিশু নির্যাতন রুখবে এবার জনগণ’ স্লোগান নিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের নিয়মিত পথনাটক অভিনয় মৌসুম ও রজত জয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) হেমন্তের সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একঝাঁক বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে পরিষদের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহকাম উল্লাহ, পথনাটক পরিষদের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মাহমুদ।

অনুষ্ঠানের সূচনাতেই স্বাগত বক্তব্য দেন পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস। সভাপতিত্ব করেন পথনাটক পরিষদের সভাপতি মান্নান হীরা।

সাংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন ‘এক শ্রেণির অপশক্তি দেশের শান্তির বিঘ্ন করছে। নানা স্থানে অরাজকতা-অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এ সব অস্থিরতা-জঙ্গিবাদ-নারী-শিশু নির্যাতন সহ্য করা হবে না। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সাংস্কৃতিককর্মীদের এই আন্দোলনে সামিল হতে হবে। নানা রকম আয়োজনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলে শান্তি বজায় রাখতে হবে। জঙ্গিবাদ, নারী ও শিশু নির্যাতন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

সাংস্কৃতিমন্ত্রী আরো বলেন ‘দেশের ক্লান্তিলগ্নে সাংস্কৃতিক কর্মীরা কখনই ঘরে বসে থাকেনি। বরং সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারও দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণে সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে এসেছে। রাজনীতির আড়ালে আবডালে সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেয়া হচ্ছে। দেশের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার যড়যন্ত্র চলছে। এ সব রুখে দিতে হলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিবাদ ও আন্দোলন করতে হবে। পথনাটক হতে পারে সে আন্দোলন অন্যতম শানিত হাতিয়ার।

নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেন, ‘কখনও সাংস্কৃতিক কর্মী, আবারও সংখ্যালঘু, আবার কখনও নিরীহ মানুষের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে। ঘটনা ঘটার পর সভা-সেমিনার আন্দোলন হয়, কিন্তু  কোনো প্রতিকার হয় না। এ কারণে একের পর এক হামলা হচ্ছে। সম্প্রীতি নষ্ট করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে প্রতিহত করতে হবে। পথনাটকের প্রদর্শনীতে অংশ নেয়া নাট্য দলগুলোর তাদের নাটকের মাধ্যমে মানুষকে আরো সচেতন করে গড়ে তুলবে।

উদ্বোধনী দিনে মান্নান হীরা রচিত ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্দেশিত এবং বাংলাদেশ পথনাটক প্রযোজিত হত্যা-ধর্ষণবিরোধী পথনাটক ‘শিকারী’ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে প্রাচ্যনাট। তাদের এই পরিবেশনায় উঠে আসে হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলা থেকে শুরু করে সম্প্রতি নাসিরনগরে সংখ্যালঘুদের হামলার বিভিন্ন দিক। বাদ যায়নি রামপাল-সুন্দর ইস্যুও। এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানান হয়েছে সৃজনশীল সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে।

নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের পরপর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ। এ সংগঠনের উদ্যোগে ১৯৯১ সালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রতি শুক্রবার পথনাটক প্রদর্শনী শুরু হয়। নভেম্বর মাসে শুরু হয়ে এই প্রদর্শনী চলে ১ মে পর্যন্ত। মৌসুম উদ্বোধনের পর এবার একেক শুক্রবার রাজধানীর একেক স্থানে পথনাটক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Link copied!