‘প্রণয়’ নিয়ে একুশে গ্রন্থমেলায় স্যামুয়েল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮, ০৫:২৩ পিএম
‘প্রণয়’ নিয়ে একুশে গ্রন্থমেলায় স্যামুয়েল

ঢাকা: অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে স্যামুয়েল-এর প্রথম গ্রন্থ ‘প্রণয়’। সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘জি সিরিজ প্রকাশ’ থেকে বেরিয়েছে গ্রন্থটি। এর দৃষ্টিমুখর প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ করেছেন খাদেমুল জাহান। মোরসালিন আলিফ জিয়নের বর্ণবিন্যাসে একশ তেত্রিশ পৃষ্ঠার নান্দনিক এ বইটির বিনিময় মূল্য ধরা হয়েছে তিনশত টাকা। 

শুধু পৃষ্ঠা জুড়েই নান্দনিকতা নয়, মানব বোধকে বিশেষভাবে তাড়িত করার অনবদ্য সাহিত্য সৃজনে রূপ পেয়েছে বইটি। যেখানে প্রাচীনতম জ্ঞানীজনদের অমৃত জ্ঞানের সাথে বর্তমানের গভীর সংযোগ প্রতিস্থাপনের প্রয়াস রাখা হয়েছে। জ্ঞানের পরেও জ্ঞান থাকে। যৌথ হতে এই জ্ঞানের জন্ম। সকল মানুষের যৌথ জ্ঞানই আমাদের এই বিশ্ব তথা বিশ্ব জ্ঞানভান্ডার। সৃষ্টির রহস্য নিয়ে সবার মাঝেই রয়েছে অমোঘ কৌতূহল। বিশ্বভ্রমন, বৈচিত্র্যে ঘেরা প্রকৃতি, দেহতত্ত, মনতত্ত, সভ্যতার বিবর্তন আর মানবিকতার বিকাশ ও বিকারতার অনন্য রসায়নে আবৃত হয়েছে ‘প্রণয়’ গ্রন্থটি।  

এতে বলা হয়েছে- যুগে যুগে বিজ্ঞানের আলোয় আলোকিত মানুষগুলো নিজ নিজ জ্ঞানের রঙে-রসে নতুন নতুন ব্যবহার রীতি, প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে চলেছেন এবং করতেই থাকবেন। বহু যৌথ কে ‘না’ বলে বাদ দিয়ে একের দিকে চলা শুরু করলো মানুষ। সেই চলা আজকে পৃথিবীর প্রায় ৭,৫০০ পারমাণবিক বোমা উৎপাদিত হয়েছে। ক্রমশ ভান্ডার বড় হচ্ছে। হয়তো কোনো এক সকালে মানুষ ঘুম থেকে জেগে শুনবে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বিলীন। যদি বা কেউ বেঁচে থাকি। এই জ্ঞানকে অগ্রসর না ধ্বংস বলা চলে? প্রাচীনরা জ্ঞানকে প্রজ্ঞা হিসেবে দেখতেন। সে জন্য তাঁরা এক মালিকানা এক-এর পিছনে চলেননি।

এমনিভাবে মানুষ হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে আত্মসমর্পণ করবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বিচারের আসনে বসিয়ে দিবে। আবার সাধারণ মানুষ ও যান্ত্রিক মানব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। ক্ষত্রিয় নমঃশূদ্র সংগ্রাম চলবে। পারমাণবিক বোমাগুলো এক একটি সঞ্চিত শক্তির সুশৃঙ্খল আধার, যেখান থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় প্রকৃতিতে। হয়তো প্রকৃতির নিয়মে এই বোমাগুলো ফাটবে পৃথিবীতে। 

একদল মানুষ কৃত্রিম হার্ট, ব্রেইন লিভার, কিডনি  দিয়ে নিজেদের তৈরি করছে চিরজীবী হওয়ার জন্য। ওদের তো এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে রোবট আছে আরাম আয়েশের জন্য।

কিন্তু আমরা আমাদের প্রাচীনদের অর্জিত জ্ঞান অবহেলায় দূরে সরিয়ে রেখেছি, চর্চা করিনি, এমনকি ভাবতেও চাইনি। এতে করে মূল জ্ঞানের ধারা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বিশ্ব। অথচ, প্রাচীন জ্ঞান অনুশীলনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি অনেক অজানা বিষয়ে, বুঝতে পারি বিচিত্র প্রকৃতিকে। আর উপলব্ধিতে আনতে পারি মহাবিশ্ব তথা বহুবিশ্বকে। কারণ আমরা প্রত্যেকেই তো মহাবিশ্ব তথা বহুবিশ্বেরই একজন। একই সূত্রে গাঁথা, এই সূত্রের মধ্যে নিহিত আছে আমার-আমি।

সুপ্রাচীন ইতিহাস, দুর্লভ তথ্যসম্ভার এবং বাস্তবিক যুক্তির আলোয়ে মানবিক ও জ্ঞানলব্দ বিশেষ আবেদন রয়েছে বইটির পত্রপল্লবে। বইটি হাতে নিতেই পাঠকের মাঝে যেমনি নতুন এক অনুভূতি তৈরি হবে, একইভাবে পড়ার সময় ভিন্ন এক মুগ্ধতায় মন ভাসাবেন পাঠক। ‘প্রণয়’-এর চমৎকার ভাববিন্যাস আর শব্দগাঁথুনি পাঠককে ঋদ্ধ করবে জ্ঞানের মায়াজালে। 

বইটির ইতিবৃত্তে লেখক বলেছেন- ‘ভারতবর্ষের মানুষ রসে, সুরে, গানে আবেগপ্রবণ থাকতে ভালোবাসে। এই আবেগকেই তো আমরা মন বলি (চেতনা)। আজ বিশ্বের সকল মানুষের এই আবেগটাই বড় বেশি প্রয়োজন। এই আবেগের মাধ্যমেই সকল প্রাণের সেতুবন্ধন সম্ভব। এই সেতুবন্ধনই ছিল প্রাচীন যৌথ সমাজের মূল মন্ত্র।’ এমনি জীবন আর জগতের বিদগ্ধ উচ্চারণে ‘প্রণয়’-এর বিনির্মাণ।

সোনালীনিউজ/বিএইচ

Link copied!