ভারতীয় পত্রিকায় নুসরাতকে নিয়ে চরম মিথ্যাচার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০১৯, ০৫:০৫ পিএম
ভারতীয় পত্রিকায় নুসরাতকে নিয়ে চরম মিথ্যাচার

ঢাকা : ফেনীর চাঞ্চল্যকার নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলায় সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এই ঘটনায় বাংলাদেশের সীমান্ত ছাড়িয়ে স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।  তবে পশ্চিমবঙ্গে একটি পুরনো প্রভাবশালী পত্রিকা এই ঘটনার যে বর্ণনা দিয়েছে তাকে চরম মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই বলা যায় না।  

ওই পত্রিকায় নুসরাত জাহান রাফির নাম লেখা হয়েছে ‘নুসরত জহান রফি’। এ ঘটনায় আনন্দবাজার তাদের পত্রিকায় নুসরাতকে ধর্ষিতা হিসেবে প্রকাশ করেছেন।  মাদ্রাসা অধ্যক্ষ তার ঘরে ডেকে নিয়ে নুসরাতকে ধর্ষণ করেছেন এমন তথ্য পুলিশের বরাত দিয়ে প্রকাশ করেছেন ভারতের অত্যন্ত প্রভাবশালী পত্রিকাটি।   

নিউজের ভেতরের অংশ

পাঠকদের উদ্দেশে আনন্দবাজারের প্রকাশিত খবরটি হুবহু তুলে ধরা হল- “মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরত জহান রফিকে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল বাংলাদেশের আদালত।  অপরাধীদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাত্র ৬২ দিনের মাথায় আজ চূড়ান্ত সাজা ঘোষণা করে ফেনির নারী ও শিশু নির্যাতন বিরোধী আদালত। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক অপরাধীকে এক লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এই টাকা নুসরতের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন জানাতে পারবে আসামিরা।

অভিযোগ, ফেনির একটি মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক সিরাজদ্দৌলার বিরুদ্ধে তাঁর আনা ধর্ষণের অভিযোগ তুলে না নেওয়ায় নুসরত নামে ১৯ বছরের ওই ছাত্রীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সরকারি আইনজীবী হাফিজ আহমেদ বলেন, এই রায় প্রমাণ করল বাংলাদেশে খুন করে কেউ রেহাই পাবে না। কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়। পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৭ মার্চ ওই শিক্ষক নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে নুসরতকে ধর্ষণ করে। নুসরতের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। এর পর থেকেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ বাড়াতে থাকে অভিযুক্ত। তাতে কাজ না হওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে বার করে ওই মাদ্রাসারই ছাদে নিয়ে গিয়ে নুসরতের হাত-পা বেঁধে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় পাঁচ জন। দেহের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল ওই ছাত্রীর। এই ঘটনার চার দিন বাদে নুসরতের মৃত্যু হয় হাসপাতালে।”

আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের প্রকাশিত খবরে পুলিশের বরাত দিয়ে ধর্ষণের খবর জানালেও মূলত কোনো পুলিশের সুনির্দিষ্ট পরিচয় উল্লেখ করেনি।  

এ দিকে আনন্দবাজার পত্রিকার এমন ভুল তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অনেকেই। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে একটি পত্রিকা যৌন হয়রানির ঘটনাকে ধর্ষণ বলে চালিয়ে দেয়। পত্রিকাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে বলেও দাবি করেছেন।

শহীদুল ইসলাম শ্যামল নামের এক সাংবাদিক লিখেছেন, ‘নাম বিকৃত করার ক্ষেত্রে আনন্দবাজার বিশ্বে শ্রেষ্ঠ। বহুদিন ধরে দেখে আসছি শুদ্ধ বানান যেটি সারা বিশ্বে একই রকম লেখে। সেই বানানও তারা নিজস্ব ক্যারিশমা প্রকাশ করার জন্য বিকৃত করে লেখে। তাদের পত্রিকার পলিসি এমনটি কিনা জানা নেই।’

‘নুসরাতের এই নিউজটাতেও তার নাম বিকৃত করে লেখা হয়েছে এবং নিউজে জঘন্য ধরনের ভুল তথ্যও দেয়া হয়েছে। নুসরাত ধর্ষণের শিকার হয়েছিল এই তথ্য তাদের কে দিয়েছে?’

শামসুজ্জামান নামের একজন লিখেছেন, ‘অথচ এই (আনন্দবাজার) পত্রিকাটা বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটা অন্যতম পত্রিকা! কি যেন হয়তো এটা তাদের বাজার কাটতির কোনো একটা পলিসি হতেও পারে।’

সোনালীনিউজ/এএইচএস

Link copied!