‘এরা তো শিবির, নতুন ফোর্স লাগবে’-ডিসি মাসুদের ফোনালাপ ভাইরাল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম
‘এরা তো শিবির, নতুন ফোর্স লাগবে’-ডিসি মাসুদের ফোনালাপ ভাইরাল

প্রতীকী ছবি

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম আবারও তীব্র আলোচনায়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ছাত্র-জনতার ওপর লাঠিচার্জের পর উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তার ফোনালাপের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, এরা তো শিবির তো স্যার, আমাদের এখানে নতুন কিছু ফোর্স লাগবে। এই কথোপকথন সামনে আসতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে।

সোমবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ তা ঠেকায়। এর পরপরই সেখানে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় এবং সন্ধ্যার দিকে জনতার চাপ বাড়তে থাকে। ঠিক সেই সময়েই মাসুদের ফোনালাপের ভিডিওটি ধারণ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামের একটি ফেসবুক পেজ ভিডিওটি পোস্ট করে লিখেছে, কোন আন্দোলন দমনের জন্য শিবির ট্যাগ এখনো কার্যকর। গতকাল ফ্যাসিস্ট আমলের পাবনার ডিসি বর্তমান রমনা ডিসি মাসুদ ধানমন্ডি-৩২ রক্ষার জন্য আন্দোলনকারীদের শিবির বলে আখ্যায়িত করে দমন অভিযানের অনুমোদন নেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির মানুষ ডিসি মাসুদের সমালোচনায় সরব। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

তাকে ঘিরে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় তার হাতে এক শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার ছবি প্রকাশ পেলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তবে তার ভিন্ন চিত্রও রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পাবনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে গুলি না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময়ের একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, যদি তোমাদের অ্যাটাক করার জন্য কেউ আসে, তাহলে আমার উপর দিয়ে যাইতে হবে।

রাজনৈতিক ও গণ-আন্দোলনে দ্রুত উপস্থিত হওয়া এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকবার আলোচনায় এসেছেন তিনি। গত মে মাসে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে বিভিন্ন দল আন্দোলনে নামলে, খেলার মাঠ থেকে জার্সি পরা অবস্থাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান তিনি; সেটিও বেশ আলোচিত হয়।

তবে বিতর্কের সঙ্গেও তার পরিচয় নতুন নয়। গত ১৫ এপ্রিল সায়েন্সল্যাব মোড়ে সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় তিনি মন্তব্য করেন, এই সংঘর্ষের কারণ আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। তারপরও তিনি আলোচনায় ওঠেন।

মাসুদ আলম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তা। র‌্যাব-৬ এর ঝিনাইদহ ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনের পর তিনি পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হন। গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি ডিএমপিতে যোগ দিয়ে রমনা বিভাগের ডিসির দায়িত্ব নেন।

এসএইচ 

Link copied!