ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

ওমানের ‘বালু’তে চাপা পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল

  • চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
ওমানের ‘বালু’তে চাপা পড়তে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল

চট্টগ্রামা : ওমানের বালুতে চাপা পড়তে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যার পর থেকে অতিক্রম করতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। ওমানের দেয়া রেমাল নামের অর্থ ‘বালু’।

সাগর থেকে আসা ঘূর্ণিঝড়ের সাথে জলোচ্ছ্বাসে চাপা পড়তে পারে সুন্দরবনসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারর বেগে উপকূলে আঘাত করতে যাওয়া এই ঝড়ের সাথে স্বাভাবিক জোয়ারের সময় মিলে যাওয়ায় উপকূলে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস দেখা দিতে পারে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১০ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল একটু বাঁম দিকে বাঁক নিয়ে সোজা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৮টায় প্রকাশিত বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঝড়টি গতকাল সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচেছ।

এদিকে ঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি চলে আসায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে এবং খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি, বরগুনা, পটুয়াখালী এবং তৎসংলগ্ন দ্বীপ ও চরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর এবং চাঁদপুর, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ ও চরসমূহকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে এসব এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চাইতে ৮ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয় বিশেষ বুলেটিনে।

কোন দিক দিয়ে যাবে রিমাল : আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের হাইড্রোমিটার পর্যবেক্ষণাগারের সহকারী পরিচালক ড. মো. ছাদেকুল আলম।

তিনি শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় বলেন, ঘূর্ণিঝড় নিয়ে যতগুলো মডেল রয়েছে সকল মডেল বলছে ঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ ও পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে যাবে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র কোন দিক দিয়ে যাবে সেটা ভাবার বিষয়। কেন্দ্র কোন দিক দিয়ে যাবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে আমাদের মডেল ও আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্রের মডেল অনুযায়ী তা খেপুপাড়ার উপর দিয়ে যেতে পারে।’

অপরদিকে এশিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মোহন কুমার দাশ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের কাছাকাছি যতো আসবে ততো তা হালকা করে বাম দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি তা টার্ন নেয়া অব্যাহত থাকে তাহলে ঝড়টি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (সাতক্ষীরার রায়মঙ্গল নদীর মোহনা) দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের উপকূলভাগে ক্ষয়ক্ষতি কম হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, আর যদি বাম দিকে টার্ন না নেয় তাহলে তা পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

কিন্তু ঝড়টি উপকূলে উঠার পর কোনদিকে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আবহাওয়ার একাধিক মডেল পর্যালোচনা করা হয়। বিভিন্ন মডেলে দেখা যায় ঘূর্ণিঝড়টি খেপুপাড়া দিয়ে উঠার পর বরিশালের পূর্ব পাশ দিয়ে মেঘনা নদী অতিক্রম করবে। পরবর্তীতে চাঁদপুর ও কুমিল্লার হোমনার পাশ দিয়ে বাঞ্চারামপুরের কাছে এসে সোজা ডান দিকে (পূর্ব দিকে) টার্ন নিয়ে আখাউড়া হয়ে ভারতের আগরতলায় গিয়ে পৌঁছাবে।  

এটি ডান দিকে টার্ন নিবে কেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে ড. ছাদেকুল আলম বলেন, ‘দেশের মধ্যভাগে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাব রয়েছে। এই প্রভাবের কারণে স্থল নিম্নচাপ আকারে এগিয়ে আসা ঝড়টি দেশের মধ্যাঞ্চলে এসে কুমিল্লার পাশ দিয়ে টার্ন নিয়ে পূর্ব দিকে চলে যাবে।’
 
ভয় দেখাচ্ছে জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস : ২০০৯ সালের ২৫ মে উপকূলে আঘাত করা ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’র কারণে উপকূলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেবারও বাড়তি জোয়ার ছিল।

রোববার (২৬ মে) উপকূলে আঘাত করতে যাওয়া রিমালও একই সময়ে অতিক্রম করতে যাচ্ছে। আর তখন যদি জোয়ার থাকে তাহলে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা অনেক বেড়ে যাবে।

দক্ষিণাঞ্চলে জোয়ারের সময় কখন জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফোকাস্টিং কর্মকর্তা জেবুন নেসা বলেন, ‘আমাদের জলোচ্ছ্বাস মডেলে দেখা যাচ্ছে মেঘনা মোহনা এলাকায় জোয়ারের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি হতে পারে। আর এই পয়েন্টে জোয়ার শুরু হবে আগামীকাল (রবিবার) বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। সাড়ে পাঁচটায় শুরু হয়ে প্রায় ৬ ঘণ্টা জোয়ার চলতে থাকার পর ভাটা শুরু হবে। এখন এই সময়ের মধ্যে যদি রিমাল উপকূল অতিক্রম করে তাহলে জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা অনেক বেড়ে যাবে।’

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পশুর নদী এলাকায় জোয়ারের সময় কখন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পশুর নদীতে হিরণপয়েন্ট, সুন্দরীকোটা ও মোংলা নামে তিনটি স্থানে জোয়ারের পয়েন্ট রয়েছে। এই তিনটি স্থানে কাল দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট থেকে দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে জোয়ার শুরু হবে। তাই এই পয়েন্ট দিয়ে যদি সন্ধ্যার পর ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে তাহলে তখন সাগরের ভাটা থাকবে। ফলে উপকূলে ক্ষয়ক্ষতি কম হতে পারে।

ভারী বৃষ্টিপাত হবে দেশজুড়ে : উপকূলে যদি জোয়ার জলোচ্ছ্বাস ও বাতাসের আতঙ্ক থাকে তাহলে সারাদেশে রয়েছে ভারী বৃষ্টিপাতের শঙ্কা। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং সিলেট এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক।

তিনি বলেন, ‘ঝড়টি উপকূলে উঠার আগেই রোববার (২৬ মে) সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত ঝরাবে। তবে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হবে রোববার ও সোমবার।’

এদিকে গতকাল দুপুর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ মিলিমিটার, সীতাকুণ্ডে ২২ মিলিমিটার, কুতুবদিয়ায় ২১, টেকনাফে ১৭ ও বান্দরবানে ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে এই বৃষ্টিপাতের কারণে দেশজুড়ে কমে এসেছে তাপপ্রবাহের প্রভাব। আজ থেকে সারাদেশে তাপমাত্রা আরও কমবে বলে জানান আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হবে বলে তাপমাত্রা কমে আসবে। এছাড়া কালবৈশাখীর মৌসুম হওয়ায় দেশের কোথাও কোথাও কালবৈশাখীও হতে পারে। ’

কোথায় কী সংকেত : উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আর উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলল হয়েছে।

# ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত মানে হল, বন্দর প্রচণ্ড এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

# ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত মানে হল, বন্দর প্রচণ্ড এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর দিয়ে বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

# বাংলাদেশের সংকেত ব্যবস্থায় মাত্রার দিক দিয়ে ৮, ৯ ও ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত একই অর্থ বহন করে। বন্দরের কোন দিক দিয়ে ঝড় বয়ে যাবে, তা বোঝাতে নম্বরের পার্থক্য করা হয়।

জলোচ্ছ্বাস, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড় ধসের সতর্কতা : আবহাওয়া অফিস বলছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সাবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি (৪৪-৮৮ মিলিমিটার/২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারিবর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে আবহাওয়া অফিস।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

উপকূলে প্রস্তুতি : গত ২২ মে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, নিম্নচাপ, গভীর নিম্নচাপ দশা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় শনিবার সন্ধ্যায়। তখন এর নাম দেওয়া হয় রেমাল। রোববার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি পরিণত হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।

সাগরে ঝড়ের আভাস থাকায় শনিবার দুপুরেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সভা বসে। উপকূলীয় ছয় জেলায় বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ আসে সেই সভা থেকে।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ‍গুছিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয় শনিবার দিনের বেলা থেকেই। ভারি বর্ষণে ভূমি ধসের শঙ্কা থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকেও বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আবহাওয়া অফিস বন্দরগুলোতে বিপদ সংকেত দেখাতে বলার পর স্বেচ্ছাসেবীরা লাল ঝাণ্ডা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। হ্যান্ড মাইকে তারা মানুষকে সতর্ক করেন, নিচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেন।

চট্টগ্রামসহ অনেকে এলাকায় শনিবার দিনের বেলাতেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যার পর আরো অনেক জেলা থেকে বৃষ্টির খবর আসে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রস্তুতি।পাশাপাশি দেশের অন্যান্য উপকূলীয় জেলাতেও ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে।

আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার পাশাপাশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার। ঝড়ের পরের উদ্ধার তৎপরতার জন্য মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।

যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের নিকটবর্তী ফায়ার স্টেশন, বিভাগীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের হটলাইন নম্বর ১৬১৬৩ অথবা কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল-এর জরুরি মোবাইল নম্বর ০১৭৩০৩৩৬৬৯৯-এ ফোন করার জন্য সকলকে অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি গতকাল সকাল ৬টায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে নিম্নচাপে এবং বৃহস্পতিবার লঘুচাপে পরিণত হয়। বছরের এ সময়ে (এপ্রিল ও মে) স্বাভাবিকভাবেই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে। চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসেও বঙ্গোপসাগরে একাধিক নিম্নচাপ ও তাদের মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে বলা হয়েছিল। মৌসুমী বায়ু প্রবেশের আগে সাগরে একটি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে সাধারণত। আর এরই ধারবাহিকতায় সাগরে ঝড়ের সৃষ্টি।

এমটিআই

Link copied!