অক্সিজেন না দেয়ায় পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২০, ০৮:৩৯ পিএম
অক্সিজেন না দেয়ায় পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ

যশোর : যশোরে চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় এক পুলিশ কর্মকর্তার স্বামী আহসানুল ইসলামের (৪৮) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। ইনসপেক্টর পদমর্যাদার ওই নারী পুলিশ কর্মকর্তা নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুন।

তার অভিযোগ, অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ না দেওয়ায় তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেছেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রোগী ভর্তির পর চিকিৎসক চিকিৎসাপত্র দিয়েছেন। তবে, খুব বেশি সময় পাওয়া যায়নি যে কারণে তিনি মারা গেছেন।

হাসপাতাল ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ৮টা ২০ মিনিটে করোনারি কেয়ার ইউনিটের ওয়ার্ডে নেয়া হয়। ৮টা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সেই সময় ইন্টার্ন ডা. সোহান দায়িত্বরত ছিলেন এবং তার ডিউটি শেষ হয় ৮টায়। ডিউটি রোস্টার অনুযায়ী সাড়ে ৮টার দিকে সেখানে আসেন ডাক্তার জাহিদ হাসান হিমেল।  

ইনসপেক্টর রোকসানা খাতুন জানান, তার স্বামী আহসানুল ইসলাম বাংলাদেশে রেলওয়েতে কর্মরত।  তিনি যশোর কোতোয়ালি থানার স্টাফ কোয়ার্টারে থাকেন।  

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ করে তার বুকে ব্যথা ও দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তিনি যশোর কোতোয়ালি থানার ওসিকে ফোন দিয়ে তার স্বামীকে হাসপাতালে পাঠান। এরপর যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাকে ভর্তি করিয়ে করোনারি কেয়ার ইউনিটের সিসিইউ ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেই সময় দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসক তার ওষুধ লিখে পায়ের কাছে স্লিপ রেখে চলে যান।  শ্বাসকষ্ট হলেও তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি। এসময় তার স্বামী ফোন করে চিকিৎসা অবহেলার কথা জানান। পাশের বেডের রোগীরাও তাকে ফোনে চিকিৎসাসেবার অবহেলার কথা জানান। পরে যশোরের পুলিশ সুপার ফোনে তাকে স্বামীর মৃত্যুর খবরটি জানান।

শোকাহত রোকসানা খাতুন আহাজারি করে বলেন, ‘পুলিশ এ দুর্যোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে রয়েছে। আর একজন পুলিশ সদস্যের পাশে দাঁড়াননি চিকিৎসকরা’।

তিনি এ বিষয়ে  প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘দায়িত্ব অবহেলাকারীদের’ শাস্তির দাবি জানান।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলিপ কুমার রায় বলেন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তির পর চিকিৎসক তাকে দেখে চিকিৎসাপত্র দেন। হাসপাতাল থেকে যা সরবরাহ করার তা রোগীকে দেওয়া হয়। কিন্তু বাইরে থেকে ওষুধ আনার প্রয়োজনে রোগীর পাশে আর কোনো লোক না থাকায় সেটা আনা হয়নি। তাছাড়া রোগী মাত্র ১০ মিনিট সময় দিয়েছেন। ফলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দায়িত্বরত চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছেন।

অক্সিজেন কেন দেওয়া হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, অক্সিজেন দেওয়ার দায়িত্ব নার্সের। কেন তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়নি তা এখনও সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে জানাননি।

সোনালীনিউজ/এএস

Link copied!