জায়গা নেই হাসপাতালে, মৃদু আক্রান্তদের হোটেলে রাখার পরিকল্পনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১, ০৫:১৭ পিএম
জায়গা নেই হাসপাতালে, মৃদু আক্রান্তদের হোটেলে রাখার পরিকল্পনা

ঢাকা : করোনায় আক্রান্ত যেসব রোগীর হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে না— তাদের হোটেলে রেখে চিকিৎসা দেয়া কথা চিন্তা করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মাইল্ড কেইস, যেসব রোগীর হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে না— তাদের জন্য আমরা আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি। যে হোটেলে ডাক্তার, নার্স এবং ওষুধপত্র থাকবে। কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থাও আমরা রাখবো। কারণ হাসপাতালে আর জায়গা নাই। আমরা এখন হোটেল খুঁজছি যেখানে একটা ব্যবস্থা করতে পারি। যারা মৃদু আক্রান্ত হয়েছে তাদের রাখতে পারি। তারা সেখানে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়ে গেলে বাড়ি চলে যেতে পারবেন। সেই ব্যবস্থাটুকু আমরা হাতে নিয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে। আস্তে আস্তে অন্যান্য শিল্প খুলে দেওয়া হবে। পরিবহন-দোকানপাট খুলবে। সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা পরে পাওয়া যাবে। হাসপাতালগুলোর ৯০ শতাংশ সিটে রোগী আছে। আইসিইউ ৯৯ শতাংশ ভরে গেছে। এই চিন্তা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। সেটার কাজ চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যাতে স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদন করি, তার ওপর আজকের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় জোর দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চীনের সিনোফার্ম ও বাংলাদেশের একটি কোম্পানির সঙ্গে এই টিকা উৎপাদন করার কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তিপত্রও আমরা পেয়ে গেছি। ভ্যাকসিনের পাশাপাশি মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা ফোর্স করতে চাই তাহলে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যাতে যারা মাস্ক পরবে না তাদের জরিমানা করতে পারে। এ জন্য অধ্যাদেশ লাগবে। আলোচনা হয়েছে, সে দিকেও আমরা যাব।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সাত দিনের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে টিকা দেওয়ার কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এই সাত দিনে প্রায় এক কোটি টিকা আমরা দেবো, এটাই আমাদের উদ্দেশ্য। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামের যারা বয়স্ক তাদের অগ্রাধিকার দেবো। কারণ তাদের মৃত্যু ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ যারা তারাই বেশি মারা যাচ্ছেন, সেই কারণে টিকা আমরা গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের জন্য জন্ম নিবন্ধনপত্র বা এসএসসির সনদ নিয়ে টিকা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

এক কোটি টিকা দেওয়া হবে ৭-১৪ আগস্ট :  অন্তত এক কোটি মানুষকে করোনার টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ রোববার ২০২০-২১ সালের প্রথম বর্ষ এমবিবিএসের ক্লাস শুরুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। রাজধানীর মহাখালির বিসিপিএস মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, এ মাসের ৭ থেকে ১৪ আগস্টের মধ্যে এ টিকা দেওয়া হবে।

৭ আগস্ট থেকে দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আজকের অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, ‘৭ থেকে ১৪ আগস্ট এই ৭ দিনে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশের মানুষকে অন্তত ১ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। দেশের ইউনিয়ন বা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত সর্বত্র এই টিকা উৎসব চলবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইউনিয়ন পর্যায়ে গণটিকাদানের যে নির্দেশনা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বয়সী মানুষ টিকা পাবেন। আজ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বয়স্ক মানুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে তারপর অন্য ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে কেবলমাত্র ভোটার আইডি কার্ড অথবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও সহজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের অধিকসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অনেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Link copied!