সর্বোচ্চ আদালতের চোখে সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গকারী খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মন্ত্রিত্বের বৈধতা নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই এই দুই মন্ত্রী প্রথমবারের মতো বৈঠকে যোগ দিলেন।
সোমবার সকাল ১০টায় সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এই বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকের শুরুতে বিভিন্ন টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সনদের সংগ্রহ করা ভিডিওতে দুই মন্ত্রীকে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
মোজাম্মেল হকের ডানে বসেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং তার বাঁয়ের আসনে রয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। আর খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বসেছেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু মাঝে।
মন্ত্রিসভা বৈঠকে কে কোন আসনে বসবেন জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আগে থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আপিল রায়ের আগে সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য কামরুল-মোজাম্মেলকে অবমানার দায়ে সাজা দেয় সর্বোচ্চ আদালত। গত ২৭ মার্চ দেওয়া ওই রায় গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন রক্ষার যে শপথ বিবাদীরা নিয়েছেন, সেই দায়িত্বের প্রতি তারা অবহেলা করেছেন। তারা আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।
গত মার্চ মাসে রায়ের পরপরই বিএনপি দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করেছিল। কামরুল-মোজাম্মেলকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেছিলেন, আদালত অবমাননার বিষয়ে দেশের জনগণকে একটি বার্তা পৌঁছে দিতেই দুই মন্ত্রীকে এ দণ্ড।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আদালত ‘শপথ ভঙ্গ হয়েছে’ বলে পর্যবেক্ষণ দেওয়ার পর দুই মন্ত্রীর আর পদে থাকার অধিকার নেই। আদালতের ওই রায়ের পরও তারা পদে থাকায় হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
তবে সর্বোচ্চ আদালতের রায় এবং কামরুল ও মোজাম্মেলের মন্ত্রী পদে থাকা নিয়ে সরকারের কোনো ভাষ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ
আপনার মতামত লিখুন :