জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে বিকশিত হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৮:৩৫ এএম
জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে বিকশিত হতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বিশ্বের পরিবর্তিত বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জাতিসংঘকে আরও কার্যকর, গতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। তিনি বলেন, শান্তি, স্থিতিশীলতা ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার স্বপ্ন পূরণে জাতিসংঘকে এখনই নিজেদের কাঠামো ও কার্যপ্রণালিতে সংস্কার আনতে হবে।

জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে ২৪ অক্টোবর দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যদি জাতিসংঘ আমাদের সবার যৌথ শান্তির আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই পরিবর্তিত বিশ্ব বাস্তবতার সঙ্গে অভিযোজিত হতে হবে। আমরা জাতিসংঘ সংস্কারের পক্ষে— যাতে এটি আরও সমন্বিতভাবে বৈশ্বিক প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হয়।”

এ বছর জাতিসংঘের ৮০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া বার্তায় ড. ইউনূস বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব সদস্য রাষ্ট্র, অংশীদার ও সংস্থাকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “এই দিনটি হলো ভয় ও অভাবমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্নবায়নের সময়। জাতিসংঘ যে বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের চেতনা ধারণ করে, তা নতুন করে জাগিয়ে তোলার সুযোগ এ দিন।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত আট দশকে জাতিসংঘ তার কার্যক্রমের পরিধি বিস্তৃত করেছে এবং শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশের অবদানের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যোগদানের পর থেকে দেশটি শান্তিরক্ষায় একটি সক্রিয় ও দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। “বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছে এবং নীল হেলমেটধারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম শীর্ষ অবদানকারী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত,” বলেন তিনি।

তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের বহু সাহসী শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তির স্বার্থে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।”

ড. ইউনূস বলেন, বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো—যেমন বাংলাদেশ—টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, সাম্প্রতিক একতরফা সিদ্ধান্ত ও দ্বিপাক্ষিক বৈষম্যমূলক নীতির ফলে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বাড়ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, “সাম্প্রতিক সংঘাতগুলো বিশ্বকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। বহুপাক্ষিক কূটনীতি এখন কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চরম জাতীয়তাবাদ ও মানবিকতার অভাব মানবজাতির দীর্ঘ সংগ্রামে অর্জিত সাফল্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।”

গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজকের পৃথিবী এক ভয়াবহ গণহত্যার সরাসরি সাক্ষী হচ্ছে।”

একই সঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি নির্যাতন ও অধিকারবঞ্চনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “আমাদের নিজস্ব অঞ্চলেও সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নতুন করে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।”-বাসস

এম

Link copied!