মিথ্যা তথ্য দিলে বাতিল হবে এমপি পদ, প্রার্থীদের যে বার্তা দিল ইসি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
মিথ্যা তথ্য দিলে বাতিল হবে এমপি পদ, প্রার্থীদের যে বার্তা দিল ইসি

ফাইল ছবি

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। সোমবার রাতে জারি করা এ অধ্যাদেশে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রার্থীর যোগ্যতা নিয়ে যুক্ত করা হয়েছে একগুচ্ছ নতুন বিধান। ফেরারি আসামি হলে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, মিথ্যা তথ্য দিলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল এবং ‘না ভোট’ ফের চালু করার মতো বড় পরিবর্তন এসেছে এতে।

অনুচ্ছেদ–২ সংশোধন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। এতে নির্বাচনকালে সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে আর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনি জটিলতা থাকবে না। ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে এ ধরনের বিধান ছিল।

অনুচ্ছেদ–১২ অনুযায়ী, কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি বা পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য হবেন। তাঁরা নির্বাচনে প্রার্থীও হতে পারবেন না।
একই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা লাভজনক প্রতিষ্ঠানের কার্যনির্বাহী পদে থাকলে প্রার্থী হওয়া যাবে না।

হলফনামায় দেশ-বিদেশে আয়ের উৎস, ব্যাংক হিসাব ও সর্বশেষ বছরের আয়কর রিটার্নের তথ্য দিতে হবে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে এবং তা প্রমাণিত হলে, নির্বাচিত হলেও তাঁর সংসদ সদস্যপদ বাতিল করতে পারবে নির্বাচন কমিশন।

অনুচ্ছেদ–১৯-এর সংশোধনীতে ‘না ভোট’ পুনঃপ্রবর্তন করা হয়েছে। কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে ব্যালটে ‘না ভোট’ থাকবে। যদি ‘না ভোট’ বেশি হয়, তাহলে পুনর্নির্বাচন হবে। ফের একক প্রার্থী থাকলে তিনি নির্বাচিত হবেন।

জোটবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রতিটি দলকে নিজস্ব প্রতীকে ভোটে অংশ নিতে হবে-এমন বিধান আনা হয়েছে অনুচ্ছেদ–২০-এ।

অনুচ্ছেদ–২৬ অনুযায়ী, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিধান বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে অনুচ্ছেদ–২৭-এ আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং চালুর বিধান রাখা হয়েছে। প্রবাসী, সরকারি চাকরিজীবী এবং কয়েদিরা এই সুযোগ পাবেন।

ভোট গণনার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকতে পারবেন। প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটারপ্রতি ১০ টাকা। দলের অনুদানের হিসাব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

আচরণবিধি ভাঙলে প্রার্থীকে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা যাবে। একইসঙ্গে দলকেও জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া মিথ্যা তথ্য, গুজব, অপতথ্য বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহারকেও নির্বাচনী অপরাধ হিসেবে ধরা হবে।

ইসিকে দেওয়া হয়েছে নতুন ক্ষমতা-কোনো আসনে ব্যাপক অনিয়ম প্রমাণিত হলে সম্পূর্ণ ভোট বাতিল করতে পারবে কমিশন। নিবন্ধন স্থগিত হলে দলের প্রতীকও স্থগিত থাকবে।

সংশোধিত আরপিওতে একদিকে প্রার্থীর যোগ্যতা ও সততার মানদণ্ড কঠোর করা হয়েছে, অন্যদিকে ভোটারদের ক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে ‘না ভোট’ ও সেনা মোতায়েনের মতো বিধান যুক্ত করে।


এসএইচ 

Link copied!