প্রতীকী ছবি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে নানা দাবি-দাওয়া ও প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রস্তাব-নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক বিবেচনায় একদিনে না করে আট বিভাগে আটদিন ভোটগ্রহণের বিষয়টি।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংলাপে এই প্রস্তাব উঠে আসে।
সকালের সেশনে অংশ নেয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। দুপুরে বৈঠকে যোগ দেয় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)।
দলগুলোর আলোচনায় প্রধানভাবে উঠে এসেছে কালোটাকা, সন্ত্রাস ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের আহ্বান। তারা দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারী ও ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের নির্বাচন থেকে বিরত রাখার দাবি তোলে। একই সঙ্গে প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ আগের মতো ২০ হাজার টাকায় পুনর্নির্ধারণেরও দাবি জানায় একাধিক দল।
খেলাফত আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা যাতে নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে না পারে, সে বিষয়ে ইসিকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দলের নেতারা আরও প্রস্তাব করেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা যেন কোনো প্রার্থীর বাসায় যেতে না পারেন-এমন বিধিনিষেধ আরোপ করা হোক।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) পক্ষ থেকে বলা হয়, কমিশন এখনো নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। অনেক দল সন্ত্রাসী ব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব ফেলছে। তফসিল ঘোষণার আগেই কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে যাতে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন সালু বলেন, জামানতের টাকা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত হওয়ায় ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে আগের ২০ হাজার টাকাই বহাল রাখার দাবি জানানো হয়। এনপিপির পক্ষ থেকে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৩ দফা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বড় দলগুলোর প্রভাব কমানোর আহ্বান জানানো হয়। দলটি সতর্ক করে বলেছে, নির্বাচনের আগে মহড়া ও প্রদর্শনী নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা বলেন, অতীতে কোনো কমিশনই শেষ পর্যন্ত নিরপেক্ষ থাকতে পারেনি, তবে এই কমিশনের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি।
বৃহস্পতিবারের সংলাপে ইসির নির্ধারিত ১১টি আলোচ্য বিষয়ের ওপর রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত ও লিখিত প্রস্তাব জমা দেয়। কমিশন জানিয়েছে, প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।
এসএইচ
আপনার মতামত লিখুন :