শুক্রবারের ভূমিকম্প শুধু ভবন ও মানুষের মনে দোলা দেয়নি—প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মেট্রোরেল অবকাঠামোতেও। সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, মোট ছয়টি স্টেশনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর যাত্রী ও কর্মীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।
শুক্রবার বিকালে প্রতিনিধি দল কারওয়ান বাজার স্টেশনে গিয়ে দেখে, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন কক্ষের ফ্লোরে সরু হলেও স্পষ্ট ফাটল রয়েছে। একই ধরনের ফাটল ধরা পড়েছে বিজয় সরণি স্টেশনের সাব-স্টেশন ফ্লোর ও প্রবেশমুখের দেয়ালে।
পল্লবী স্টেশনের সাব-স্টেশন কক্ষ এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভেতরেও দেয়াল ও মেঝে ফেটে গেছে। প্রথমে কর্মীরা বিষয়টি স্বীকার না করলেও দেখানোর পর একজন স্টেশন কন্ট্রোলার জানান—“আগেও হয়ে থাকতে পারে, আবার ভূমিকম্পেও হয়ে থাকতে পারে—নিশ্চিত নই।”
মিরপুর ১১ স্টেশনের বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনে ফ্লোরে ফাটল নিশ্চিত করেছেন দায়িত্বশীল এক কর্মী। মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশনে কিছু টাইলসে চিড় ধরেছে বলে জানিয়েছেন অপর এক কর্মী, যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি।
ফার্মগেট স্টেশনের লিফট কোরের ভেতরেও দেয়ালে ফাটল দেখা গেছে। একাধিক কর্মী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ভূমিকম্পের পরপরই স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও সন্ধ্যার পর থেকে মেট্রোরেল স্বাভাবিকভাবে চলাচল শুরু করে। এতে যাত্রীদের একাংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কারওয়ান বাজার স্টেশনে দেখা পাওয়া যাত্রী সাব্বির রহমান বলেন, “এতগুলো জায়গায় ফাটল—তারপরও চালু রাখা ঠিক হয়নি। দুর্ঘটনা হলে দায় নেবে কে?”
ব্যাপারটি জানতে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আরও একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
তবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, “ফাটলগুলো আমরা দেখেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এগুলো গুরুতর নয়। অতিরিক্ত পরীক্ষা চলছে।”
মেট্রোরেল চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, “ট্রায়াল রান করে দেখে নিয়েছি যে অপারেশনে সমস্যা নেই—তাই সার্ভিস চালু করেছি।”
এম
আপনার মতামত লিখুন :