সেই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ০৭:৪৯ পিএম
সেই যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য

ফাইল ছবি

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে হত্যার আগে পরিকল্পিতভাবে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। এরপর তাকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১৪-এর কার্যালয়ে গ্রেপ্তারদের বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিত করতে গিয়ে সংস্থাটির পরিচালক নাইমুল হাসান বলেন, ঘটনার শুরু হয় বিকেল চারটার দিকে। পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড কারখানার ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেন দিপুকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেন। ইস্তফা নেওয়ার পর তার নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তাকে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশের কাছে না দিয়ে কেন জনতার হাতে হস্তান্তর করা হলো, সেই প্রশ্নেই কারখানার দুজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেডের ফ্লোর ম্যানেজার আলমগীর হোসেন (৩৮) এবং কারখানার কোয়ালিটি ইনচার্জ মিরাজ হোসেন আকন (৪৬)। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন তারেক হোসেন (১৯), লিমন সরকার, মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) ও মো. নাজমুল। শেষ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।

ঘটনার বর্ণনায় র‌্যাব পরিচালক নাইমুল হাসান বলেন, ধর্ম নিয়ে কী বলা হয়েছিল বা কাকে বলা হয়েছিল-এ বিষয়ে কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেনি। তার ধারণা, উত্তেজিত জনতার আবেগ বা পূর্বের কোনো শত্রুতা থেকেও ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কোনো অভিযোগের অজুহাতে একজন মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা, গাছে ঝুলিয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া কোনোভাবেই আইনের আওতায় পড়ে না। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ধরনের নৃশংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য মনে করে না।

তিনি আরও জানান, মামলাটি যেহেতু থানায় দায়ের হয়েছে, তাই মূল তদন্ত করবে পুলিশ। পাশাপাশি র‌্যাবের পক্ষ থেকেও একটি ছায়া-তদন্ত চলবে। গ্রেপ্তারদের কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন বলেও জানান তিনি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ভালুকা উপজেলায় ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে দিপু চন্দ্র দাসকে (২৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার লাশে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে স্থানীয়রা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অর্ধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এসএইচ 

Link copied!